১০ বছরে সম্পদ ও আয় বেড়েছে ফরহাদ হোসেনের 

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2023-12-05 14:16:50

মেহেরপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের সম্পদ বেড়েছে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৩ লাখ টাকার। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। ৫ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২ কোটি টাকার ওপরে। একইসাথে বেড়েছে তার বার্ষিক আয়।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ২৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকার। গত ১০ বছরে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দুটিই বৃদ্ধি পেয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন ফরহাদ হোসেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনটিতে এমপি নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক স্বাধীনতা পদক জয়ী (মরোনত্তোর) বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ছহিউদ্দীনের যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে জায়গা করে নেন মন্ত্রিপরিষদে। গেল পাঁচ বছর তিনি জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ফরহাদ হোসেনের হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, তার বার্ষিক আয় এখন ৭৭ লাখ ১ হাজার ৮৫০ টাকা। আয়ের খাতগুলো হলো- কৃষিখাত, ব্যবসা, সঞ্চয়পত্র ও প্রতিমন্ত্রীর সম্মানী, পারিশ্রমিক ও ভাতা। পাঁচ বছর আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৪০ টাকা। যার উৎস ছিল চাকরি।

২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে পেশায় শিক্ষক ফরহাদ হোসেনের চাকরি ছাড়া কৃষিখাত কিংবা ব্যবসায় কোন আয় ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় কৃষিখাত, শেয়ার-সঞ্চয় ও অন্যান্য আয় বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেওয়া হলফনামায় তার আয় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে তার বড় আয়ের খাত হলো প্রতিমন্ত্রীর পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানী। এখান থেকে তার বার্ষিক আয় ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। কৃষি খাত থেকে ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং শেয়ার, আমানত, সঞ্চয় থেকে ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ফরহাদ হোসেনের হাতে নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২৯ লাখ ১ হাজার টাকা। বন্ড, শেয়ার বা সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে ৪০ লাখ টাকা। গাড়ি আছে ১টি যার মূল্য ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণ আছে ২৫ ভরি এবং ইলেট্রনিক্স সামগ্রী ও আববাসপত্র রয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার। ব্যবসায় বিনিয়োগ আছে ৩১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। শটগান ও পিস্তল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং শেয়ার ব্যালেন্স ১২ হাজার টাকা এবং ২৫ ভরি স্বর্ণ যার দাম ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার।

এর বিপরীতে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ব্যক্তিগত ঋণ (বন্ধক বিহীন) আছে ৫৮ লাখ টাকা। 

২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামায় ব্যাংকে জমাসহ নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৬০ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৩ লাখ টাকার এবং স্থাবর সম্পদ হিসেবে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমির পরিমাণ ৫১ শতক। 

এবারের নির্বাচনের হলফনামায় তার কৃষি জমির পরিমাণ ২৭৪.৪৫ শতক (উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে) এবং অকৃষি জমি ৩১.৪৩ শতক ও উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রজেক্টে ১৬৫৪ বর্গ ফুটের ফ্লাট বুকিং রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী নামে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী এর পরিমাণ ১ কোটি ২০ লাখ এবং স্বর্ণ ১৩০ ভরি (বিবাহের উপহার ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত)। এর মধ্যে নগদ টাকা ৪৭ লাখ, বাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্থায়ী আমানত ২০ লাখ, ১টি মাইক্রোবাস ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র ৪ লাখ টাকার এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ ৪০ লাখ টাকা।

গত ১০ বছরে ফরহাদ হোসেনের স্ত্রীর সম্পদও বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। ২০১৪ সালের হলফনামায় স্ত্রী অস্থাবর সম্পদ ছিল ১৪ লাখ ৭০ হাজার এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় এ পরিমাণ ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর