বাঁচানো গেল না মায়ের আদরের স্বপণকে

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2024-03-08 20:40:17

বাবা মারা গিয়েছেন তিন বছর আগেই। এরপর থেকে ষাটোর্ধ্ব মা পারুল বেগমকে দেখভালের পুরো দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন জিয়াউল করিম স্বপণ। এর মধ্যে বিয়ে করে হয়েছিলেন সংসারীও। কিন্তু মা আর স্ত্রীকে নিঃস্ব করে মাত্র ৩০ বছর বয়সেই স্বপণকে চলে যেতে হলো ওপারে।দ

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে মসজিদে যাওয়ার জন্য হালিশহরের শ্যামলি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার পর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হন স্বপণ। এরপর কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই তরুণ। এখন এই তরুণের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাকে আগামীকাল শনিবার (৯ মার্চ) দাফন করার কথা রয়েছে।

স্বপণ চাকরির পাশাপাশি স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতিতেও জড়িত ছিলেন। যুক্ত ছিলেন হালিশহরের শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সঙ্গেও। শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রিফাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘স্বপণকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছিলাম সবাই। কিন্তু পারলাম না। এই ঘটনায় তার পরিবার একটা মামলা করেছিল। তবে এখনো সেই অটোরিকশাচালক গ্রেফতার হননি। আমাদের এখন একটাই দাবি সেই অটোরিকশা চালককে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করা হোক।

তার মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা পারুল বেগম ও স্ত্রী আকলিমা আক্তার। দুজন এতটাই শোকাস্তব্দ, কথা বলার সব শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। মা পারুল বেগম অস্পুট স্বরে বারবার বলছিলেন, ‘আমার আর কেউ রইল না। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

অন্যদিকে বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন আকলিমা আক্তার। এই তরুণী বলেন, সুস্থ-সবল শরীরে নামাজ পড়তে বের হলো। সেদিন শবে বরাত ছিল বলে রোজাও রেখেছিলেন আমার স্বামী। কথা ছিল গরুর মাংস কিনে ফিরবেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একটা ফোন আসলে জানতে পারি, আমার স্বামীকে অটোরিকশা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্বামীকে আর ফিরে পেলাম না। এখন স্বামীকে যে গাড়ি ধাক্কা দিয়েছিল সেই গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে শাস্তির মুখোমুখি করলে মনকে একটু হলেও সান্ত্বনা দিতে পারব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর