‘ছেলেকে সুস্থ ফিরিয়ে দিন’ জিম্মি নাবিক সাব্বিরের মায়ের মিনতি

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল | 2024-03-13 14:15:31

টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের ছেলে সাব্বির হোসেন। গত সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছিলেন যে বিষুব রেখা অতিক্রম করলাম। মাথা ন্যাড়া করে ছবি দিয়েছিলেন তিনি। এরপর মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকাল থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানান বোন মিতু। 

একমাত্র ছেলের জিম্মির খবর শুনে বাবা হারুন অর রশিদ হাউমাউ করে কাঁদছেন। মা সালেহা বেগম বুক চাপড়িয়ে কাদঁছেন আর বিলাপ করছেন। ‘আমার একমাত্র ছেলেকে ‍সুস্থভাবে ফিরিয়ে দিন এবং মুক্ত করে আনেন’ বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিনতি জানাচ্ছেন তিনি।

সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছেন। তার ভাই যেন জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে তাদের কাছে আবার ফেরত আসেন। গ্রামের লোকজন ও আত্মীয় স্বজনরা বাড়িতে এসে তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। জিম্মির খবর পেয়ে স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সবাই। তাদের একটাই দাবি সরকার যেন দ্রুত সাব্বিরসহ সবাইকে মুক্ত করে আনে।

জানা যায়, ভারত মহাসাগড়ে জলদস্যুদের কবলে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী জাহাজের ২৩ জন নাবিকের মধ্যে রয়েছেন সাব্বির হোসেন। পিতার নাম হারুনুর রশিদ। বাড়ি তিনি নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন। টাঙ্গাইলের কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।

সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা বলেন, সাব্বিররা এক ভাই এক বোন। তিনি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছেন। তার বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বিরের বাবা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। সাব্বিরের চাকরি হওয়ার পর তার মা শয্যাসায়ী স্বামীকে নিয়ে সহবপুর তার বাবার বাড়ি বসবাস করেন। সহবতপুরের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামে এখন আর কেউ থাকেন না। একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির। তার কিছু হয়ে গেলে তাদের আর চলার উপায় থাকবে না। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, সাব্বিরসহ সবাইকে যেন জিম্মি দশা থেকে দ্রুত মুক্ত করে আনে।

সাব্বিরের একমাত্র বোন মিতু আক্তার বলেন, আমার ভাই এক মাস আগে বাড়ি এসেছিলেন। একদিন থেকেই তিনি চলে গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমার বাবা মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা শুধু কেঁদেই চলেছেন। আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা মাকে বাচাঁনো যাবে না। অতি দ্রুত আমার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর