অনুমোদন নেই, ব্যবস্থাপত্রে তবু এন্টিবায়োটিক লিখছেন বিপ্লব-জাকির

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা | 2024-04-23 19:33:58

সরকারি পশু ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্পে এআই টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করেন আজিজুর রহমান বিপ্লব ও জাকির হোসেন। নিজস্ব প্যাডে সিল স্বাক্ষর করে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তারা।

বিধি অনুযায়ী তাদের এন্টিবায়োটিক লেখার অনুমোদন না থাকলেও ব্যবস্থাপত্রে তারা লিখছেন সেটাও। বলছেন, ঊর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশের কথা, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন তারা এমন অনুমোদন দেননি।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিয়মের তোয়াক্কা না করে উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের আস্থাশীল পরিচয় দিয়ে পশু দেহে ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। অতিমাত্রায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে পশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলা ও জেলা কর্মকর্তাদের আশীর্বাদে আজিজুর রহমান বিপ্লব ও জাকির হোসেন দীর্ঘদিন দাপট দেখিয়ে অন্যান্য পশু চিকিৎসকদের কোণঠাসা করে রেখেছেন।

ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক পশুপালনকারী নারী অভিযোগ করে বলেন, সরকারি প্রকল্পে চাকরি করেন বলে জাকির হোসেনের কাছ থেকে গরু-ছাগলের চিকিৎসা করাই। তিনি নিজেকে সরকারি ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। তার ভুল চিকিৎসায় অনেক গরু অসুস্থ হতে দেখেছি।

গরু অসুস্থ হলেই তিনি ব্যবস্থাপত্রে এন্টিবায়োটিক লিখে থাকেন। এন্টিবায়োটিকের প্রভাবে গরুর সমস্যা আরও প্রকট হয় বললে দাবি করে বলেন, সরকারি জেলা কর্মকর্তারা আমার চিকিৎসা সম্পর্কে জানেন। তারা যেভাবে চিকিৎসা দিতে বলেছেন সেভাবে এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা দিচ্ছি বলে তিনি দাপটের সঙ্গে বলেন।

এ-বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শংকর কুমার দে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আজিজুর ও জাকিরের তাদের চিকিৎসাপত্রে এন্টিবায়োটিক লেখার অনুমোদন নাই। তাদের এই ধরনের চিকিৎসার অনুমতি আমি দিইনি। এ আই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লব ও জাকির আমার নাম ভাঙিয়ে চলছেন।

অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা পর্যায়ের এ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি ভেটোরিনারি রেজিস্টার্ডপ্রাপ্ত ছাড়া এন্টিবায়োটিক লেখার অনুমোদন কারো নাই।

বিপ্লব ও ও জাকির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছেন এমন অভিযোগের জবাবে জেলা প্রাণিসম্পদ এ কর্মকর্তা বলেন, এগুলো ভুয়া; তারা আমাদের নাম ভাঙিয়ে চলে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ আই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লব বলেন, আমি জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নির্দেশে এন্টিবায়োটিক লিখি। তারা আমার লেখার ক্ষমতা দিয়েছেন। আপনি যা খুশি করতে পারেন। তারা আমার রক্ষা করবে।

আরেক অভিযুক্ত জাকির হোসেন বলেন, আমি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নির্দেশে এন্টিবায়োটিক লিখি। তারা আমার লেখার ক্ষমতা দিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর