অজ্ঞাত নারীর মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধার ওই শিশুর জ্ঞান ফিরেনি

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2024-05-30 00:54:34

নেত্রকোনার পূর্বধলায় কাঁচা সড়ক থেকে ৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাত নারীর মরদেহ পাশে পড়ে থাকা দুই বছরের শিশুর জ্ঞান এখনো ফেরেনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শিশুটি গুরুতর কোন আঘাত পায়নি বলে জানিয়েছে চিকিৎসক। তবে, এখন পর্যন্ত নিহত ওই নারীর পরিচয় মিলেনি।

বুধবার (২৯ মে) বিকাল সাড়ে সাড়ে ৫ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ের তিনতলা ৩৩ নাম্বার ওয়ার্ডে গিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ওই শিশুর বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। শিশুর মাথার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে শিশুর মস্তিস্কে রক্ষক্ষরণের ঘটনা ঘটেনি। আপাত দুষ্টিতে তার কোন অস্ত্রপ্রচারের প্রয়োজন নেই। শিশুর জ্ঞান কেন ফিরছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীমের তত্বাবধানে শিশুর চিকিৎসা চলছে। তিনি আরও বিস্তারিত বলতে পারবেন।

এর আগে ওই দিন নেত্রকোনা জেলার পুর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের কাছিয়াকান্দা গ্রামে আনুমানিক ২ বছরের জীবিত শিশুসহ অজ্ঞাত (৩০) এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ভোরে ওই উপজেলার কাছিয়াকান্দা গ্রামের এক ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়ে মাদরাসার পাশে তার মায়ের কবর জিয়ারত করতে যান। এসময় এক শিশু ও অজ্ঞাত নারীকে কাঁচারাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় শিশুটিকে জীবিত পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

পূর্বধলা থানার ইনচার্জ  (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে গ্রামবাসী এক নারী ও শিশুকে কাঁচা রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিত শিশু ও অজ্ঞাত পরিচয়হীন নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। পরে শিশুটিকে তাৎক্ষণিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, শিশুটি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ের তিনতলার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। হাসপাতালে শিশুটি কাছিয়াকান্দা গ্রামের ইউপি সদস্য রোস্তম আলী ও সুজাত মিয়া দেখাশোনা করছেন। এই ঘটনায় আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

শিশুর সাথে থাকা সুজাত মিয়া বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে নারীর মরদেহ ও শিশু পাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে পুলিশ আসে। পুলিশ মরদেহ নড়াচড়া করলে নারীর মাথার পিছনে শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, এমন চিন্হ দেখা যায়। আঘাতের ফলে মস্তিস্ক মাথা থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায়। তাছাড়া, শিশুর শরীরে যে রক্ত লেগে আছে, তা তার মায়ের শরীরের রক্ত।

হাসপাতালের নিউরোসার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীম বলেন, আঘাতে অনেক সময় মস্তিস্ক নড়ে যায়। যে কারণে অনেক সময় জ্ঞান ফিরতে সময় লেগে যায়। তবে, শিশুর জ্ঞান ফিরতে কত সময় লাগবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর