চুয়াডাঙ্গায় আরেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা | 2024-06-29 07:28:42

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খানকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোরে রেফার্ড করেছেন চিকিৎসক। 

শুক্রবার (২৮ জুন) রাত ৮টার দিকে জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আলার মোড়ের অদূরে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান। 

এর আগে গত ২৮ মে উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।

রেজাউল হক নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মনোহরপুর আলার মোড়ে চা খেতে আসেন। আজও একসাথে বসে চা খেলাম। পরে উনি মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। এক মিনিট পরেই এক নারীর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে আমরা দৌঁড়ে যায়। গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান সাহেবকে কে বা কারা পিছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে গেছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক তাকে যশোরে রেফার্ড করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে হয়ত দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে। না হলে তারা চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলত।’

মনোহরপুর গ্রামের জুলি খাতুন নামের ওই নারী জানান, ‘সন্ধ্যার পর আমার ছোট ছেলের সাথে আলার মোড়ে সুপারি কিনতে যাচ্ছিলাম। পথের মাঝে দেখি চেয়ারম্যান মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আর পাশ দিয়ে একটি মোটরসাইকেলে মুখোশ পরিহিত দুজন ব্যক্তি চলে যাচ্ছে। এসময় আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে।’

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তাফিজুর রহমার সুজন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পিঠের ডান পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের জখম পাওয়া গেছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তিনি অ্যাজমা ও পেশারের রোগী, তাই ঝুঁকি এড়াতে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে রেফার্ড করা হয়েছে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে দুর্বত্তরা। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পায়নি। তবে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ জানান, ‘আমরা জেলা থেকে ডিবি টিম, সাইবার টিম নিয়ে এসেছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নজরদারি করা হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, কারা এ গুপ্ত হামলার সাথে জড়িত, তা দ্রুতই উন্মোচন করতে পারব।’

এর আগে গত ২৮ মে জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানকে একই স্টাইলে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় তাকে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্ব্যুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ঘটনায় জীবননগর থানায় একটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ওই ঘটনার এক মাসের মাথায় আবারও আরেক ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর