আখাউড়ায় বাড়ছে পানি, পানিবন্দী এক হাজার মানুষ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া | 2024-08-22 11:05:11

ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন তলিয়ে আমদানি-রফতানি ও যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। একইসঙ্গে মোট আটটি পয়েন্টে তীব্র বেগে পানি ঢুকছে অখাউড়ায়।

পানির তোড়ে একটি অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন এলাকা পানিতে তলিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে যাত্রী পারাপার। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত আখাউড়া উপজেলার ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে আখাউড়ায় ভারি বর্ষণ শুরু হয়। একই সাথে সকাল থেকে বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারতের আগরতলা থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। একপর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ১০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে।

এই দিন সকালে ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিজেদের ঘর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় ঘর থেকে বের হয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুবর্ণা আক্তার পাশের বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এসময় তাড়াহুরা করে সরতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে একটি গর্তে পড়ে ডুবে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন জানান, ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। ৩৫ গ্রামের ১ হারের ও বেশি মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। তাদের শুকনা খাবার দেয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানিবন্দী এলাকার কেউ যদি আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান তাদের জন্য সেখানেও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনরে সাথে কথা হয়েছে। এলাকাবাসী মিলে বাঁধের অংশ মেরামত করেছেন। সেতুটি মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত যান চলাচলের উপযোগী করা যাবে না।

তিনি আরও জানান, আখাউড়া-আগরতলা সড়কের অস্থায়ী সেতু ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যাত্রী পারাপার আপাতত বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাত্রী পারাপার শুরু করা যাচ্ছে না।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন নিয়ে তিনি বলেন, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন পানিতে তলিয়ে রয়েছে। সেখানে ইন্টারনেট সেবাও ভেঙে পড়েছে। কর্মকর্তারা সেখানে যেতে পারছে না। যার কারণে যাত্রী পারাপার পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। পানি না কমলে যাত্রী পারাপার শুরু করা যাবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর