জয়পুরহাট সদর থানা থেকে লুট হওয়া একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৩৭ রাউন্ড গুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের গুলশান মোড়-দেবীপুর রেলগেইট এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুস্কৃতিকারীরা থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্র লুট করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে জয়পুরহাট শহরের দেবীপুর রেলগেইট এলাকা থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৭.৬২ মিমি একটি পিস্তল, ৩৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির মুঠোফোনে জানান, উদ্ধার করা অস্ত্র-গুলি জয়পুরহাট থানার জব্দ তালিকা মূলে জমা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরো জানান, জয়পুরহাট থানা থেকে লুট হওয়া ৪৪টি অস্ত্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৮টি উদ্ধার করা হয়েছে।
এসময় জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির, পুলিশের ডিআইও-১ কাওসার আলী, এসআই মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার খালসমূহের প্রবাহ পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পরিষ্কার অভিযান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর ঐতিহ্যবাহী জেল খাল ও লাকুটিয়া খালের সংযোগ স্থল মড়কখোলার পোল থেকে এ অভিযানের উদ্বোধন করেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল স্থানীয় সরকার উপপরিচালক গৌতম বাড়ৈ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরিশাল মনদীপ ঘরাই, অতিরিক্ত জেলা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরিশাল লুসি কান্ত হাজন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরিশাল সদর মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার, বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিডি ক্লিন বরিশাল, বেলা, বাপা, এসএনডিসি, মানবীসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
লক্ষ্মীপুরে ভুলুয়া নদীর ২০টি ডুবন্ত বাঁধে বন্যার পানি আটকে আছে। এই নদীর দুই তীরের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় প্রসাশনের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। গত কয়েকদিন ধরে ভুলুয়াতে থাকা অবৈধ বাঁধ, মাছ শিকারের বেল জালসহ নানা প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে চলছেন তারা।
সম্প্রতি এ আইনজীবী জেলার বন্যা কবলিত বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষায় ভুলুয়া নদীসহ জেলার নদী-খালের অবৈধ দখল ও প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন।
আদালত নদী-খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এরপর স্থানীয় প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে রিটকারী আইনজীবী আবদুস সাত্তার পলোয়ান স্বেচ্ছাসেবকদের উজ্জীবিত করে নিজেও নামেন এসব নদী-খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে।
জানা যায়, প্রায় দেড় মাস ধরে পানিবন্দী লক্ষ্মীপুরের ভুলুয়া নদীর দুই পাড়ের লাখ লাখ বাসিন্দা। ভুলুয়ার তলদেশে ডুবন্ত বাঁধ আর মাছ শিকারের জাল বসানোর কারণে পানি প্রবাহে বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এতে পানি যেন নামছেই না। ফলে দীর্ঘ মেয়াদী বন্যা ও জলাবদ্ধতার কবলে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা এবং রামগতি উপজেলার চর রমিজ, চর বাদাম ও চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের বাসিন্দারা৷
স্বেচ্ছাসেবীরা জানায়, প্রতিবন্ধকতা অপসারণে নেমে ভুলুয়ার পদে পদে কৃত্রিম বাঁধ দেখতে পান তারা। স্থানীয় গুটি কয়েক লোভী বাসিন্দারা ভুলুয়ার অস্তিত্ব বিলীন করে দিয়েছে। কেউ ভুলুয়ার পাড় দখল করে বসতি করেছেন। কেউ বাঁধ দিয়ে জাল বসিয়ে মাছ শিকার করছেন। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে ভু্ুলুয়ার পানি প্রবাহের গতি নেই বললে চলে।
ভুলুয়া নদীতে এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্যার পানি নামছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় ভুক্তভোগীদের।
তারা জানান, নোয়াখালী অঞ্চল থেকে আসা পানি ভুলুয়া নদী হয়ে কমলনগর ও রামগতি হয়ে এ দুই উপজেলার পূর্বাঞ্চলের পানি মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হয়। সেই পানি গিয়ে পড়ে বঙ্গোপসাগরে।
রিটকারী আবদুস সাত্তার পলোয়ান বলেন, ভুলুয়া নদীতে পানির নিচে প্লাস্টিক নির্মিত গোপন বাঁধের সন্ধান পাওয়া গেছে। মাত্র পাঁচ কিলোমিটার অংশে ২০টির বেশি তৈরি কৃত্রিম বাঁধ আবিষ্কার করেছি আমরা। ভুলুয়া তীরের মানুষদের ৫০ দিনের বন্যার অন্যতম কারণ এই প্লাস্টিক বাঁধ। ১০ ফুট নেট জালে পুরো নদীর মাছ যাতে ঢুকতে বাধ্য হয় সেজন্য এপাশ থেকে ওপাশে ২০০ ফুট প্লাস্টিক বাঁধ দিয়ে রেখেছে। যা দিয়ে ১ ফোঁটা পানিও প্রবাহ হতে পারেনা, ইট, পাথর, রড, সিমেন্ট দিয়ে বানানো বাঁধ যেমন পানি আটকে রাখতে পারে, এটাও তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ৫০ ফুট অন্তর অন্তর এরকম বাঁধ।
এ আইনজীবী বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালীর বন্যা সত্যি 'মনুষ্য সৃষ্ট' বন্যা। এসব প্রতিবন্ধকতা অপসারণে সবার সহযোগিতা এবং সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নদী-খালের প্রতিবন্ধকতার জন্য অনেকাংশে দায়ী এলাকার কিছু জনগণ। আমাদের এবারের বন্যা ভবিষ্যতের জন্য অশনির সংকেত খাল ও নদীগুলো পুনরুদ্ধার করতেই হবে। খাল এবং ভুলুয়া নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে না পারলে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি রোগ দেখা দিবে।
তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় নগরীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে মাঠে নেমেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করলে সড়কের দুই পাশেই গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে এমনিতেই যানজটপ্রবণ সড়কটিতে যানজট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণকাজের ফলে স্কুলের সামনে সবসময় যানজট লেগে থাকে। র্যাম্পের নির্মাণকাজের জন্য মূল সড়কের দুই–তৃতীয়াংশ জায়গা দখল হওয়ায় প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে ও পরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া এই স্কুলের বিপরীত পাশে রয়েছে সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেজন্য দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের চাপে সড়কটি এমনিতেই ব্যস্ত থাকে। এর মধ্যে র্যাম্প নির্মাণ হলে পথ আরও সংকুচিত হয়ে যাবে। তখন সড়কের ওপর আরও মারাত্মক চাপ পড়বে। এজন্য তাঁরা র্যাম্প নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সাঁয় আছে শিক্ষকদেরও। এরই মধ্যে র্যাম্প না করার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছেন বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ উল হাসান চৌধুরী।
আরিফ উল হাসান চৌধুরী চিঠিতে উল্লেখ করেন, প্রতিদিন বাওয়া ও সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী এই সড়ক হয়ে যাতায়াত করে। ফলে ক্লাস শুরুর আগে ও পরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। র্যাম্প নির্মাণ করা হলে যানজট চিরস্থায়ী রূপ নেবে।
আরিফ উল হাসান বলেন, 'আমরা এই নিয়ে গত মে মাসে নির্মাণকাজ বন্ধ ও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিডিএ চেয়ারম্যান বরাবরে একটা চিঠি দিয়েছিলাম। এরপরেও কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ চলমান রেখেছে।'
তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহাফুজুর রহমানের দাবি নগরের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতামত নিয়েই র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'বর্তমানে সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নির্মাণসামগ্রীর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে যাবে। দ্রুত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ২৯ লাখ টাকা সহায়তা দিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য-সহায়তা প্রদান করে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১ দিনের মূল বেতন উনত্রিশ লক্ষ আট হাজার দুইশত উনসত্তর টাকা ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে’ জমা প্রদানের লক্ষ্যে এসংক্রান্ত ১টি চেক স্বাক্ষর করে প্রদান করা হয়েছে। সেটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছেন।
আগস্টে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।