বৈরী আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগরের পটুয়াখালী উপকূল কয়েক দিন ধরে উত্তাল। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টিও। এমন পরিস্থিতিতে মাছ না পেয়ে খালি হাতে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকালে ঘাটে নোঙর করা ট্রলারের জেলেদের সঙ্গে কথা হয়।
তারা জানায়, মৌসুমী বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। তাই সাগরে টিকতে না পেরে পটুয়াখালী উপকূলের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর খাপড়াভাঙা নদীতে আশ্রয় নিয়েছে জেলারা।
ইলিশ মৌসুমের শুরুতেই সামুদ্রিক মাছ আহরণের ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠলেও দফায় দফায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে আশানুরূপ ইলিশের দেখা পায়নি জেলেরা। সব মিলিয়ে হতাশ উপকূলের কয়েক হাজার জেলে। কেউ কেউ পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন। আবার অনেকেই দাদন নিয়ে বাধ্য হয়ে এ পেশাই পড়ে আছেন, বলেন তারা।
আলীপুর মৎস্য বন্দরের ব্যবসায়ী জাফর হাওলাদার বলেন, ৬৫ দিনের মৎস্য অবরোধ শেষেই সাগরে শুরু হয়েছে দফায় দফায় নিম্নচাপ, যে কারণে সাগর থেকে ট্রলার নিয়ে বার বার জেলেরা ঘাটে ফিরে আসছে। ফিরে আসা ট্রলারগুলোর প্রত্যেকটিতে কয়েক লাখ টাকার বাজার করে সাগরে পাঠাতে হয়। কখনও নিম্নচাপ, কখনও লঘুচাপ সব মিলিয়ে বড় রকমের ক্ষতির মধ্যে ট্রলার মালিকরা।
এফবি ফারজি ট্রলারের মাঝি আমজেদ হাওলাদার বলেন, অবরোধের পর এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি। বাজার সওদা করে যখনই সমুদ্রে নামি দু-একদিন ফিশিং করার পরই আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়, কোন উপায় না পেয়ে আবার ঘাটে ফিরে আসি। গত দুদিন আগে ৫ লাখ টাকার বাজার নিয়ে গেছি মাত্র ৭৫ হাজার টাকার মাছ নিয়ে ফিরে এসেছি। এভাবে চলতে থাকলে এ পেশা ছেড়ে দিতে হবে।
মহিপুর আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন দাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, ইলিশের দাম চড়া থাকলেও, ইলিশের দেখা পাচ্ছি না। এতে জেলেসহ আড়তদাররা বিপাকে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত চার বছর ধরে ব্যবসার মুখ দেখিনি। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা যেতে না যেতেই ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত আবার অবরোধ। লাখ লাখ টাকা দাদন দেওয়া। এভাবে চলতে থাকলে এ পেশায় টিকে থাকা যাবে না।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরা ট্রলারগুলো সকাল থেকে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র বার বার খারাপ হচ্ছে।