চুয়াডাঙ্গায় সাবেক এমপি টগরের বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যা মামলা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা | 2024-10-04 16:35:05

চুয়াডাঙ্গায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রোকনুজ্জামানকে অপহরণ ও ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নাটক সাজিয়ে হত্যার ৫ বছর পর মামলা হয়েছে। এ মামলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, তৎকালীন দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকুমার বিশ্বাসসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দামুড়হুদা আমলি আদালতে মামলাটি করেন নিহত ছাত্রের বাবা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।

মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্যতম আসামিরা হলেন- দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম জাহাঙ্গীর, সহকারী পরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার নন্দী, শেখ রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল দিপু গাঙ্গুলী, খালিদ মাসুদ, নজরুল ইসলাম, শফিউর রহমান, ফিরোজ ইকবাল এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের মাছুম, সুমন, রাজিব ও সজল।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রোকনুজ্জামান ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গা ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বেআইনি, অনৈতিক কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এবং ভিন্ন মতের অনুসারী হওয়ায় আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে রোকনুজ্জামানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আসামি আওয়ামী লীগ নেতা আলী আজগার ভোট চুরির মাধ্যমে ভুয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নির্দেশে ওই বছরের ২৯ আগস্ট দুপুরে আসামি সজল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রোকনুজ্জামানকে কৌশলে মুঠোফোনে ডেকে দক্ষিণ চাঁদপুর ছটাঙ্গার মাঠে যেতে বলেন।

বাবা আবু বকর সিদ্দিককে জানিয়ে রোকনুজ্জামান সজলের সঙ্গে ছটাঙ্গার মাঠে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর আসামিরা অস্ত্রের মুখে রোকনুজ্জামানকে অপহরণ করেন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজখুঁজি করেও কোথাও পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে লোকমুখে জানতে পারেন দামুড়হুদার জয়রামপুর কাঁঠালতলার বখতিয়ার মিয়ার বাঁশবাগানে রাত দুইটার দিকে একজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে ছেলে রোকনুজ্জামানের লাশ শনাক্ত করেন বাবা আবু বকর সিদ্দিক। ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে তাঁর দাফন করা হয়।

মামলায় এজাহারে আরও বলা হয়েছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রোকনুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে এজাহারভুক্ত ১১-১৫ নম্বর আসামি কৌশলে তাকে অপহরণ করেন। এরপর প্রধান আসামি আলী আজগার টগরের নির্দেশে দামুদহুদা থানার ওসি সুকুরমার বিশ্বাসসহ পুলিশ সদস্যরা রোকনুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করেন। সন্তানের দাফন শেষে বাদী মো. আবু বকর ছিদ্দিক ৩১ আগস্ট দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। বাদী দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় বাড়িতে ফিরে মামলা করতে দেরি হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মামুন আখতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হত্যার ৫ বছর পর নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক এমপি, দামুড়হুদা মডেল থানার সাবেক ওসি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা কামাল মামলা আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঝিনাইদহ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর