ময়মনসিংহে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিনভর জেলার সকল উপজেলায় বৃষ্টিপাত হয়। বিশেষ করে সিমান্তবর্তী হালুয়াঘাট, ধোবাউড়ায় বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ফিশারি, কয়েক হাজার একর জমির ফসল।

স্থানীয় সুত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টার টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে জেলার সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট, ধোবাউড়াসহ আশপাশের এলাকা। প্রবল বর্ষণে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, বহু ঘরবাড়ি, স্কুল কলেজ, মাছের ফিসারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও, কয়টা গ্রাম তলিয়ে গেছে পুরাপুরি তথ্য এখনো পাইনি। নেতাই নদীর বাঁধ কিছু কিছু পয়েন্টে ভেঙে গেছে। এক থেকে দেড় হাজার লোক পানিবন্দী আছে, প্রায় তিনশত ঘরবাড়ির পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা প্রাথমিক ভাবে সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বলেছি জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে। যদি কেউ পানিবন্দি হয়ে থাকে। তাহলে তাকে সাথে সাথে উদ্ধার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটে নাই।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেসব এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে, সাবরেজিস্টার অফিসের সামনে খাদ্যগুদামের সামনে পানি জমে আছে। এছাড়া উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ময়মনসিংহ আবহাওয়া ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তী দিনগুলোতে আবহাওয়া কেমন থাকবে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হবে বা অনলাইনে দেয়া আছে। সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩১৭ জন। এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কেউ মারা যায়নি।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৪ জন।

এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৫০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, রংপুর বিভাগে ১০, বরিশাল বিভাগে পাঁচজন এবং সিলেট বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৭৭ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন পুরুষ ও ৯১ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৫ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৩ হাজার ৪৭৩ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছেন ১ হাজার ৭৫৬ জন। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৭১৭ জন।

দুর্গাপূজাকে ঘিরে আওয়ামী লীগ নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসব উপলক্ষেও আওয়ামী অপশক্তি নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে। তাই এবারও বিএনপিসহ ছাত্র জনতা তাদের সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে। আপনারা নির্ভয়ে নিরাপদে উৎসব মূখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সকল ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। এটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই এবারের পূজায় বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিটি মণ্ডপে ঐক্যবদ্ধভাবে টিম করে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকবে। পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধি সমন্বয়ে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হবে। আগের চেয়ে এবার আরও বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে এই সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব পালিত হবে।

তিনি চট্টগ্রামের সর্বস্তরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। পূজার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশিস ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।

এসময় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ এধরণের মতবিনিময় সভা করে সহযোগিতা করায় বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, কোনো অপশক্তি যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। পতিত সরকারের দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু এদেরকে কিছুতেই সফল হতে দেওয়া হবে না। এই ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করতে সার্বিক সহযোগিতা করবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। চট্টগ্রামের প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিএনপির সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে দিনরাত পাহারার ব্যবস্থা করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এরশাদ উল্লাহ বলেন, ধর্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশি। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি। তারা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বিভাজনের মাধ্যমে সব সময় দেশে অস্থিতিশীল করে রাখার চেষ্টা করেছে। হিন্দুদের সবচেয়ে ক্ষতি আওয়ামী লীগই করেছে। পতিত সরকারের দোসররা শান্তিপ্রিয় চট্টগ্রামে বারবার ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু চট্টগ্রামের সচেতন জনতা ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেয়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপির নেতাকর্মীরা যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

নাজিমুর রহমান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন প্রতিটি মণ্ডপে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে টিম করে সনাতনীদের পাশে থাকে। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ধর্মীয় উৎসব শান্তি ও স্বস্তি সহকারে উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে সহযোগিতা করবে মহানগর বিএনপি। আমাদের থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ স্থানীয়ভাবে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সাথে সমন্বয় করে তাদের পাশে থাকবে।

এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি হারুন জামান, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, কেন্দ্রীয় সদস্য সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি এডভোকেট চন্দন তালুকদার, সাধন ধর, বিমল দে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি, রত্নাকর দাশ টুনু, বর্তমান সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, অরুপ রতন চক্রবর্তী, সাংবাদিক প্রদীপ শীল, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহবায়ক অধ্যাপক জন্টু কুমার বড়ুয়া প্রমুখ।

বরিশালে গাছকাটা শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) জুমা বাদ নগরীর জামিয়া ইসলামিয়া মাহমূদিয়া মাদ্রাসার সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হয় এলাকাবাসী। পরে সেখানে দোষীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা। পরে মিছিলটি গিয়ে বরিশাল কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এর আগে গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের চরআবদানী এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বেচা-বিক্রিতে ব্যস্ত ছিল মো. সুমন ফকিরের ছেলে অভিযুক্ত আলভী।

এ সময় একই এলাকার মো. মানিকের ছেলে মো. রাকিব বাধা প্রদান করলে তাকে চাইনিজ সেভেন ফায়ার ছুড়ি দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে জখম করে। এতে রাকিবের মাথা, হাত, কোমড়, পিঠ, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুত্বর জখম হয়। এসময় রাকিবের ডাক চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে তার এক আত্মীয় এগিয়ে আসলে তাকেও বেধরক মারধর করে আলভী।

ঘটনার বিষয়ে মৃত মোসলেম ঢালীর ছেলে আরিফ ঢালী আলভীর বাসায় জানতে গেলে তার উপরেও চড়াও হয়ে তাকেও ছুড়িকাঘাত করায় আরিফের পেটে গুরুত্বর জখম হয়। এদিকে ঘণ্টাখানেক পরে একই এলাকার নূর ইসলামের ছেলে মো. রাকিব ইসলামকে তার বাসার ছাদে ডেকে নিয়ে তাকেও একইভাবে ছুড়িকাঘাত করে জখম করে। মাদকসেবী আলভীর এমন কর্মকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে আলভীর বাসায় গেলে পুনরায় একই এলাকার মো. আনিচকে এলোপাথারী কুপিয়ে জখম করে আলভী।

এতে আনিচের পেটের ভুড়ি বের হয়ে যায় এবং কিডনীতে গুরুত্বর জখম হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে চিকিসৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে তার মৃত্যু হয়।

ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন হাতে এ সময় বক্তারা বলেন, মাদকসেবী আলভীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ায় মো. আনিচকে হত্যা করা হয়। এই হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে বরিশাল কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরে আলম জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখনো মামলা হয়নি, মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।