লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্য গুদামের ২৫০ মেট্রিক টন চাল তছরুপ করে লাপাত্তা হয়েছেন খাদ্য পরিদর্শক গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে চাল চুরির ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিক অভিযানে গুদাম সিলগালা করা হয় এবং ৩০ মেট্রিক টন চালও উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা খাদ্য পরিদর্শক (ওসি এলএসডি) ফেরদৌস আলম বৃহস্পতিবার ভোর রাতের আঁধারে ২৫টি ট্রলি যোগে গুদাম থেকে চাল সরিয়ে ফেলেন। এমন একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক গুদামে অভিযান চালান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম। এ সময় চালের হিসাবে গড়মিল ও গুদাম কর্মকর্তা লাপাত্তা থাকায় গুদাম সিলগালা করা হয়।
তছরুপ হওয়া চাল উদ্ধারে জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে রাতেই অভিযান চালান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম। এ সময় উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের সুকানদিঘী এলাকার চালকল মালিক একরামুল হকের গুদাম থেকে ৩০ মেট্রিক টন ওজনের ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় গুদাম মালিক পলাতক থাকায় তাকে ধরতে পারেনি অভিযানিক দলটি।
এ ঘটনা তদন্তে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেটকে আহবায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (ভারপ্রাপ্ত) সদস্য সচিব করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। তদন্ত কমিটিও তদন্ত শুরু করেছেন। একই সাথে তছরুপকৃত চাল উদ্ধার ও লাপাত্তা গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমের সন্ধানে অভিযান অব্যহত রয়েছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, ট্রলিতে করে রাতের আঁধারে গুদাম থেকে চাল সরানো হচ্ছে এমন একটি গোপন খবরে রাতেই গুদাম পরিদর্শনে যাই। সেখানে গুদাম কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। গুদাম কর্মকর্তার সন্ধান পেতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তছরুপকৃত চাল উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, গুদামের ২৫০ মেট্রিক টন চাল তছরুপ করে নিখোঁজ রয়েছেন গুদাম কর্মকর্তা ফেদৌস আলম। আমরা অভিযান চালিয়ে ৬০০ বস্তা অর্থাৎ ৩০ মেট্রিক টন চাল উদ্ধার করেছি। বাকীটা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আমি নিজেও গুদাম পরিদর্শন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।