কোটি টাকার অবৈধ মার্কেট গুড়িয়ে দিলো রেলওয়ে

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট | 2025-01-12 18:13:45

রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানে লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধ কোটি টাকার মার্কেট গুড়িয়ে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১২ জানুয়ারি) দিনভর লালমনিরহাট শহরের বাণিজ্যিক এলাকা বিডিআর গেটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিভাগীয় রেলওয়ে সহকারী স্টেট অফিসার আব্দুর রাজ্জাক।

উচ্ছেদ অভিযানে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক প্রয়াত জহুরুল হক মামুন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের ভাতিজা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এরশাদ হোসেন জাহাঙ্গীরের দখলে থাকা এসব মার্কেটসহ ১৭টি বিভিন্ন ফলের দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে রেলওয়ের প্রায় এক একর জমি দখল মুক্ত হয়েছে।

রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ ও স্থানীয়রা জানায়, লালমনিরহাট শহরের সর্বাধিক ব্যস্ত এলাকা বিডিআর গেট। ব্যাবসা বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র খ্যাত এ এলাকায় যানজন নিরসনে সড়কের পাশে কিছু জায়গা উন্মুক্ত রাখে রেলওয়ে। সেই উন্মুক্ত জায়গায় গড়ে উঠে মার্কেট। পরবর্তীতে সেখানে ওয়ান এলিভিনে তৎকালীন যৌথ বাহিনী সবকিছু গুড়িয়ে দিয়ে দখলমুক্ত করে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে শহরের এ ব্যস্ততম জায়গায় নজর পড়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের।

একটা সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে রেলওয়ের সেই জায়গা দখলে নেন লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক প্রয়াত জহুরুল হক মামুন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের ভাতিজা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এরশাদ হোসেন জাহাঙ্গির। দখলকৃত জায়গা ভাগাভাগি করে সেখানে তারা আলিসান মার্কেট গড়ে তোলেন। জহুরুল হক মামুনের মৃত্যুর পর মার্কেটটি তার পরিবারের দখলে থাকে। সেই থেকে কয়েক দফায় অবৈধ স্থাপনা সড়াতে চিঠি পাঠায় রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাবে এতদিন অবৈধ ঐ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতাদের দখলে থাকা অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করায় স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তবে তাদের দাবি নতুন করে অন্যকোনো প্রভাবশালী যাতে পুনরায় রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলে নিতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকার আহ্বানও জানান সাধারণ মানুষ।

পথচারী নুর নবী খান বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে বিডিআর গেট সড়কটি সংকুচিত হয়েছিল। যার কারণে যানজটের সৃষ্টি হত। যখনে নিরপেক্ষ সরকার আসে তখন উচ্ছেদ হয়। আবার নতুন সরকার আসলে সেই দলের নেতারা প্রভাব খাটিয়ে দখলে নিয়ে মার্কেট করে। এবারও উচ্ছেদ হয়েছে দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু উদ্ধারকৃত জায়গা পুনরায় যেন বেদখল না হয় সেটাও রেলওয়ের নজরদারিতে রাখা দরকার। একই সাথে ব্যস্ততম এ সড়কে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি করেন তিনি।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে সহকারী স্টেট অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, রেলের জমিতে অবৈধ ভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের নিয়মিত অংশ হিসেবে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে প্রায় রেলের এক একর জমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। রেলের জমিতে যত অবৈধ স্থাপনা আছে, পর্যায়ক্রমে সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলেও তিনি জানান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর