সরকারি সার ও বীজ বিক্রির সময় কৃষি কর্মকর্তা আটক
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরকারি প্রণোদনার আওতায় কৃষকের মাঝে বিতরণের ৫ প্যাকেট সবজি বীজ ও ১২০ কেজি সার কীটনাশকের দোকানে বিক্রির সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে স্থানীয় জনগণ হাতে নাতে আটক করেছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে দেড়টার দিকে রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারের মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স নামের একটি কীটনাশকের দোকানে সার-সবজি বীজ বিক্রির সময় এঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ওই বিএসের নাম আতোয়ার রহমান। তিনি রমনা মডেল ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন।
জানা গেছে, ঘটনার দিন রোববার সকালে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রনোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। দুপুরে প্রণোদনের পুষ্টি বাগানের সবজির বীজ ও সার অফিস থেকে তুলে জোড়গাছ বাজারের একটি কীটনাশকের দোকানে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন ওই বিএস আতোয়ার রহমান। পরে আশেপাশের স্থানীয় লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে সার ও বীজসহ তাঁকে আটক করেন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে জোড়গাছ বাজারে কীটনাশকের দোকানের ভিতরে পুষ্টি বাগানের জন্য ৫ প্যাকেট সব্জির বীজ ও পাঁচ বস্তা (২৪ কেজির বস্তা) সার দেখতে পাওয়া যায়। পরে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বাবু জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান দুপুর দেড়টার দিকে কৃষি অফিস থেকে অটোতে করে সার ও বীজ বিক্রি করার জন্য এই দোকানে নিয়ে আসেন। পরে আমরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁকে হাতেনাতে আটক করি। কৃষকের সার ও বীজ তাঁদের মাঝে বিতরণে কারচুপি করে এভাবে দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। উনি একা নন এর সাথে কৃষি কর্মকর্তাসহ অনেকেই জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সঠিক তদন্ত করে তাঁকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে কৃষকের সার-বীজ সংকট কেটে যাবে বলেও তিনি জানান।
মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স দোকান মালিক ফারুক ইসলাম জানান, আমার সারের দোকান ওই বিএস অটোতে করে দোকানে সার এবং বীজ নিয়ে আসেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সরকারি সার-বীজ দোকানে নিয়ে এসেছে তাহলে অবশ্যই বিক্রির জন্যই এনেছিলেন। তবে মালামাল দোকানে আনার আগে আগে বিএস তাঁর সাথে কোন যোগাযোগ করেননি বলেও ওই দোকানদার জানান।
অভিযুক্ত বিএস আতোয়ার রহমান বলেন, আমি নিয়ে আসিনি। পুষ্টিবাগানের বীজ ও সার কৃষকরা কৃষি অফিস থেকে তুলে এনে নিজেরাই ওই দোকানে রেখেছে। তারা আগামীকাল নিয়ে যাবে।
চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষণ দাস জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা আমায় খবর দিলে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরে ওই দোকান থেকে সার ও বীজ জব্দ করে নিয়ে এসেছি।
কুড়িগ্রাম খামারবাড়ীরর উপপরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিকেলে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আগামীকাল জেলা থেকে দুইজন কৃষি কর্মকর্তা তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। কৃষকের সার-বীজ বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকলে ওই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।