লিফটে আটকে বাবা-মার সামনেই মৃত্যু শিশু কন্যার

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-31 01:38:50

মায়ের জন্মদিন পালনে ডিনারে যাওয়ার পথে ত্রুটিপূর্ণ লিফটের দরজার চাপায় প্রাণ হারিয়েছে শিশু আলভিরা রহমান (৯)। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগরের গ্রিন পিস অ্যাপার্টমেন্টে এ ঘটনা ঘটে। মতিঝিল বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, নিহত আলভিরা ওই অ্যাপার্টমেন্টের ১৫ তলার বাসিন্দা আলি বাবা ডোর কোম্পানির মালিকের ছেলে শিপলু রহমানের মেয়ে। ঘটনার সময় শিপলু তার স্ত্রী উম্মে সালমা রহমান রুনি, মেয়ে আলভিরা ও ছয় মাস বয়সী এক সন্তান নিয়ে ১৫ তলা থেকে নামছিলেন। আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আলভিরাকে লিফটের দুই দরজা চাপ দেয়। ওই সময় সেন্সর কাজ করছিল না এবং উপরে কল ছিল বলে শিশুকে নিয়ে লিফট একটু উপরে উঠে গেলে তার মাথাও ছাদের সঙ্গে বাড়ি খায়।’ পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, শিশুকে উদ্ধার করে স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লিফট ত্রুটিপূর্ণ জেনেও ভবন পরিচালনা পর্ষদ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে ওই ভবনের ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ। অ্যাপার্টমেন্টটির একাধিক বাসিন্দা জানান, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ১৮০টি ফ্ল্যাটের এই অ্যাপার্টমেন্টে রয়েছে তিনটি বিল্ডিং। ছয়টি লিফটে তিনজন লিফটম্যান কাজ করলেও এখন রয়েছেন একজন। কিন্তু এটাকে ‘দুর্ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে ভবন পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর মিয়া দাবি করেন, ‘লিফটের বয়স হয়েছে; ৭-৮ বছর হয়ে গেছে। লিফটের সার্ভিসিং ঠিক ছিল; লিফটম্যানও ছিল।’ নিহতের চাচা পিয়াল জানান, বৃহস্পতিবার ছিল আলভিরার মা রুনির জন্মদিন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই রাতে বাইরে যাচ্ছিল ডিনার করতে। শিপলুর কল অনুযায়ী লিফট ১৫ তলায় এসে থামে। এ সময় লিফটে ঢোকার চেষ্টা করে আলভিরা। উপরের দিকে কল থাকায় লিফটি উঠতে থাকে। তখন আলভিরার হাত বা পা লিফটের দরজায় আটকে যায়। দরজা বন্ধ হওয়ার সময়ও বাবার হাত ধরে ছিল আলভিরা। এ সময় শিপলু আলভিরাকে টান দিলে হয়ত সে বেরিয়ে আসতে পারত বলে উল্লেখ করেন পিয়াল। তিনি বলেন, ‘ওইসময় লিফটের সেন্সর ঠিকভাবে কাজ করেনি। আলভিরার হাত বা পায়ের একটি অংশ লিফটে আটকে যায়। লিফটের সেন্সর কাজ করে ১৫ ও ১৬ তলার মাঝখানে। ওই সময় লিফটের ছাদের চাপে মেয়েটার মাথা ফেটে যায়। এভাবে ১৫-২০ মিনিট আটকে থাকে আলভিরা। তার ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসা রক্ত লাগে বাবা-মায়ের শরীরে। পরিবারের সদস্যরা অ্যাপার্টমেন্টের অফিসে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেনি।’  

এ সম্পর্কিত আরও খবর