নির্মাণের দেড় বছর পরও তালাবদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-30 22:51:14

রাজশাহীর দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ওই দিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরকে (এলজিইডি) ভবনটি বুঝিয়ে দেয়। নির্মাণ শেষ হওয়ার পর ১১ মাস পড়ে থাকে ভবনটি। জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ভবনটির উদ্বোধন করেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা।

তবে উদ্বোধন করা হলেও জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অনুমতি পাননি স্থানীয় মুকিযোদ্ধারা। ফলে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি নির্মাণ শেষ হওয়ার দেড় বছর পার হলেও পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

উপজেলা প্রকৌশল দফতর সূত্র জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। ভবনটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে স্মরণকালের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়

যা বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঠিকাদার সেলিম রেজার প্রতিষ্ঠান ‘রুপালী অ্যান্ড সেলিম জেভি ও লিড পার্টনার’ ভবনটির নির্মাণ কাজের টেন্ডার পান। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে নির্মাণকাজ শুরু করেন।

ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর নির্মাণকাজ শেষে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরে ভবনটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর প্রায় ১১ মাস পর ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ভবনটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা।

তবে উদ্বোধন হলেও জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা প্রশাসনকে ভবনটি হস্তান্তর না করায় তা ব্যবহারের অনুমতি পায়নি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। ফলে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছর পরও তালাবদ্ধ ভবনটি।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মান্নান ফিরোজ জানান, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভবনটি নির্মাণ করেছে সরকার। অথচ গাফিলতি করে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ না করার অযুহাতে দেড় বছর ধরে ভবনটি তালাবদ্ধ ফেলে রাখা হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দ্রুত ভবনটি মুক্তিযোদ্ধাদের বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে বৃদ্ধকে থানায় এনে বিপাকে পুলিশ!

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন সরকার বলেন, ‘ভবনটি আমাদের দফতরের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এখনো সেটি জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছে। ভবনটি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত প্রক্রিয়া শেষে ভবনটি মুক্তিযোদ্ধাদের বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।’

জানতে চাইলে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান বলেন, ‘যথাসময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে ভবন বুঝিয়ে দিয়েছিল। তবে কিছু সমস্যার কারণে হস্তান্তরে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এখন সমস্যা সমাধান হয়েছে। শুধু হস্তান্তরের অপেক্ষা।’

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান বলেন, ‘আমি যতদূর জেনেছি- ভবনটিতে কিছু আসবাবপত্রের সংকট থাকায় কর্তৃপক্ষ কিছুটা সময় নিচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগ হতে ভবনটি বুঝে পেলেই দ্রুত ভবনটি মুকিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর