সাড়ে ৩ হাজার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করছে ইডটকো

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-25 23:51:34

সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইডটকো তাদের টাওয়ার টু কমিউনিটি (টি২সি) প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়ার গ্রামীণ জনপদের সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করছে।

ইডটকোর মূল কাজ মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা। তারা তাদের টাওয়ার পরিচালনার পর যে বাড়তি বিদ্যুৎ থাকে সে বিদ্যুৎ দিয়ে টাওয়ারের আশপাশের বাড়িগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়। ইডটকো টাওয়ার পরিচালনার জন্য ডিজেল জেনারেটর ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার করে এবং এখান থেকেই আসে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ।

ইডটকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুরেশ সিধু বলেন, ‘ইডটকো বিশ্বাস করে, শুধুমাত্র টাওয়ার প্রতিষ্ঠা করার মধ্যেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। তাই আমরা ইডটকো টাওয়ারের কাছাকাছি বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে চাই। আমরা বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের বিভিন্ন প্রকল্পে আমরা একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। টাওয়ার টু কমিউনিটি উল্লেখযোগ্য অবদান, ব্যবসায়ের বাইরেও সামাজিক উন্নয়নে আমাদের প্রতিশ্রুতি ও অগ্রাধিকারের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি হতে পারে তাদের বাড়িতে, চিকিৎসা সেবায়, বিদ্যালয়ে অথবা উপাসনালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার মাধ্যমে। আমরা সব সময় আমাদের টাওয়ারের কাছাকাছি বসবাস করে এমন লোকালয়ের মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে চাই। ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে বৈদ্যুতিক সুবিধা পাচ্ছে এমন মানুষের হার যথাক্রমে ৮৮ শতাংশ এবং ৭০ শতাংশ। কিন্তু এখনো কিছু জনগোষ্ঠী রয়েছে, যারা জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত না হওয়ার কারণে অনেক নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে পারে না।’

তিনি জানান, ২০১৬ সালে ইডটকোর টি২সি প্রোগ্রাম চালু হয় এবং এটি চালু করার পেছনে মূল লক্ষ্য ছিল, টাওয়ারের আশপাশে বসবাসকারী মানুষদের বৈদ্যুতিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা। বর্তমানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়ায় ইডটকোর এ রকম ৩২টি সাইট রয়েছে, যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে সমাজের মানুষজন।

‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৬টিরও বেশি স্থানে ১০২০টি বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়েছে ইডটকো। এছাড়া ইডটকো যাদুর হাট এবং নীলফামারীতে সৌরবিদ্যুৎ চালিত পানির পাম্প স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে এ সব এলাকার কমপক্ষে ৩০টি পরিবারের সদস্যরা বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা পাচ্ছে। এছড়া প্রকল্পটির মাধ্যমে একটি হাসপাতাল, ৩০টি মসজিদ এবং ২৮টি বিদ্যালয়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের ক্ষেত্রে টি২সি প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভিন্ন। এ প্রকল্পের আওতায় সহজে পৌঁছানো যায় না এমন সব এলাকায় হেপাটাইটিস বি, বিসিজি, হাম এবং পোলিও টিকা সংরক্ষণ করার জন্য রেফ্রিজারেশন সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে উপকার পাচ্ছে অন্তত ২০০০ পরিবার। মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রেও টি২সি প্রকল্পের আওতায় এনার্জি সরবরাহের মাধ্যমে রেফ্রিজারেশন সিস্টেম সচল রাখা হয়। ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের দুর্গম এলাকায় মাসে দুইবার করে ওরাং আসলি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা করা হয়। আমরা যে সব এলাকায় কাজ করি, সেখানকার সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে কাজ করি। ইডটকোতে আমরা বিশ্বাস করি যে আপনি ততটাই উত্তম, যতটা আপনি সমাজের কল্যাণে ফিরিয়ে দেবেন। এ কারণেই আমরা এমনভাবে কাজ করার চেষ্টা করি, যেন আমাদের কার্যক্রমগুলো অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং টেকসইভাবে পরিচালনা করা হয় যায়,’ যোগ করেন সুরেশ।

কমিউনিটি প্রকল্পের পাশাপাশি ইডটকো টেকসই স্থায়িত্বের ব্যাপারেও গুরুত্ব দেয়। এ নীতির আলোকে ইডটকোর সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এবং নিশ্চিত করা হয় আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন অবকাঠামোগুলোর পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর