রংপুরের পীরগঞ্জে নবনির্মিত মেরিন একাডেমিতে আগামী বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা।
তাদের দাবি, নির্মাণাধীন মেরিন একাডেমির দ্বিতীয় প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হবার আগেই এর নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরে এই একাডেমির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। একাডেমি কর্তৃপক্ষ চাইলে নতুন বছরের জানুয়ারিতে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারবে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে মোবাইলে এসব কথা জানান গণপূর্ত অধিদফতরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ও তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল গফফার।
জানা গেছে, পীরগঞ্জ মেরিন একাডেমি প্রকল্পটি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের অবহেলিত এই জনপদের সাধারণ জনগোষ্ঠী শিক্ষা-দীক্ষায় আরও অগ্রসর হবে। পাশাপাশি এই মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ দেশ-বিদেশের চাহিদানুযায়ী এখান থেকে দক্ষ, মেধাবী নৌ-কর্মকর্তা ও নৌ-প্রকৌশলী তৈরি হবে।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম মোতাবেক কোর্সের মেয়াদ হবে চার বছর। প্রথম পর্যায়ে প্রতি বছর ১০০ জন করে মেধাবী নাবিক ও নৌ-প্রকৌশলী এখান থেকে বের হবে। এছাড়াও দেশের সকল জেলায় সমুদ্র বিষয়ক জ্ঞান চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে রংপুর অঞ্চল থেকে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ নাবিক এবং নৌ-প্রকৌশলীদের মাধ্যমে অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
একই সাথে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যারও সমাধান হবে। পীরগঞ্জ মেরিন একাডেমির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে ১০০ জনের স্থায়ী কর্মসংস্থান ও ১০০ জনের আউটসোর্সিং সহ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অন্তত দুইজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
রংপুর গণপুর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাকিউল আলম জানান, সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী মানবসম্পদ উন্নয়ন, বেকার সমস্যা সমাধান, দারিদ্রতা দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ফলিরবিলে ১০ একর জমির উপর আন্তর্জাতিকমানের মেরিন একাডেমি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। একশ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পীরগঞ্জ মেরিন একাডেমি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পের আওতায় একাডেমিক ভবন ছাড়াও প্রশাসনিক ভবন, প্যারেড গ্রাউন্ড, ডরমেটরি ভবন, সাতটি আবাসিক ভবন, মসজিদ, অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুলসহ ৩৫টি অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
২০১২ সালে শুরু এই প্রকল্পের কার্যক্রম ২০১৫ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প সংক্রান্ত জমি অধিগ্রহণ, হস্তান্তর, সংশোধিত ডিপিপি প্রনয়ণ ও অনুমোদন কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একাডেমির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে ফিনিসিং টাচ কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে একাডেমির সকল ভবনসহ পুরো অবকাঠামো মেরিন একাডেমি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের অবকাঠামো হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই বহুল প্রত্যাশিত পীরগঞ্জ মেরিন একাডেমিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা যাবে। কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।