২৪৫৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্প অনুমোদন

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-24 04:16:24

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তিনটি প্রস্তাবসহ মোট ৮ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৪৫৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তোফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি এ অনুমোদন দেয়। বৈঠক চলাকালে অর্থমন্ত্রী জরুরী কাজে চলে যাওয়ার পর বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তিনটি প্রস্তাব ছিল তা অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এরমধ্যে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর উপর ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি। প্রকল্পে মোট হবে ১১৭০ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২ সালের ৮ মে তারিখ এবং ২য় সংশোধিত ডিপিপি ২৭/০২/২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখ একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। সেতুর নকশা পরিবর্তন হওয়ায় সংশোধিত নকশা অনুযায়ী অতিরিক্ত টেস্ট পাইল, টুল প্লাজা বরিশাল প্রান্তের পরিবর্তে পটুয়াখালী প্রান্তে, বরিশাল প্রান্তে ফেরিঘাট স্থানান্তরসহ কিছু অতিরিক্ত টেন্ডার/নন-টেন্ডার আইটেম যুক্ত হওয়ায় ভেরিয়েশন অর্ডার বাবদ অতিরিক্ত ১৪৭ কোটি ৮৪ লাখ ১ হাজার ৭৭১ টাকা এবং সম্পাদিত চুক্তিমূল্য ১০২২ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৪ টাকা (ভ্যাট/আইটিসহ) সর্বমোট ১১৭০ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪৫ টাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব সিসিজিপি’র অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

অন্য দুইটি প্রস্তাব হলো, 'চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটির জাতীয় মহাসড়ক (এন-১০৬) এর হাটহাজারি থেকে রাউজান পর্যন্ত সড়কাংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণ' প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ২১৪ কোটি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০৪) ২ লেন অংশ (মহীপাল থেকে চৌমুহনী পূর্ব বাজার পর্যন্ত) ৪ লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক অনুমোদিত প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩০৮ কোটি টাকা।

এছাড়াও আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৫০ হাজার মেট্রিকটন গম আমদানি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেটে গম আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৫০ হাজার টন গম ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স সুইস সিঙ্গাপুর ওভারসীস প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি মেট্রিকটন ২৬৮ দশমিক ১৪ মার্কিন ডলার দরে আমদানি করা হবে ৫০ হাজার মেট্রিকটন গম। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কেজি ২২.১৭ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয় হবে।

জানা গেছে, আমদানির লক্ষ্যে খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক আন্তর্জাতিক কোটেশন আহবান করলে ৭টি কোটেশন বিক্রি হলেও ৪টি কোটেশন জমা পড়ে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক পর্যালোচনাপূর্বক ৪টি গ্রহণযোগ্য দরদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে সুপারিশকৃত সর্বনিম্ন কোটেশনার সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স সুইস সিঙ্গাপুর ওভারসীস প্রাইভেট লিমিটেডের এ গম আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় পরামর্শক ফার্মের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ১৭২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। জাপানের নিপ্পন কোই প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট (২য় সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রফেশনাল আউটসোর্সিং ট্রেনিং অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস ফর আইটি/আটিইএস ইন্ডাস্ট্রি সংক্রান্ত সেবা ক্রয়ের বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় ১৫টি লটে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার টাকার চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এজন্য ব্যয় হবে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের ১টি প্যাকেজের দরপত্রের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৪৬ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহবানের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছিল তাদের এ ধরনের কাজে কারিগরি দক্ষতা না দরপত্রটি বাতিল করা হয়।

বৈঠকে নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০১৯ সময়ে অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য জিটুজি ভিত্তিতে আমদানিয় মোগ্যাসের প্রিমিয়াম ও মূল্য (রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী) অনুমোদনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এজন্য ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ২০১৯ সালে দেশে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ১৯/০৯/২০১৮ তারিখের সিসিইএ'র অনুমোদনক্রমে ৬০ হাজার টন +১০% মোগ্যাস (অকটেন ৯৫ আরওএন) ৫০ শতাংশ জিটুজি প্রক্রিয়ায় এবং ৫০ শতাংশ টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আমদানি করে। স্থানীয়ভাবে পেট্রোলের চাহিদা বৃদ্ধি এবং জুলাই, ২০১৯ হতে সিএনজির মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অকটেনের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জরুরি প্রয়োজনে চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর সময়ে ৩০ হাজার টন (+১০%) মোগ্যাস আমদানির লক্ষ্যে ৭টি জিটুজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশন আহবান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মতামত পাওয়া যায়। তাদের মধ্য থেকে বিদ্যমান প্রিমিয়ামে সম্মত একমাত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইন্দোনেশিয়ার পিটি.ভবুমি সিয়াক পুসাকো জাপিন (বিএসপি) এর কাছ থেকে জিটুজ ভিত্তিতে নভেম্বর-ডিসেম্বর, ২০১৯ সময়ে ৩০ হাজার টন (+১০%) মোগ্যাস আমদানি করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর