ড্রিমলাইনারের প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ১ সেপ্টেম্বর

, জাতীয়

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম  | 2023-08-30 06:09:07

ঢাকা: ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। বিমান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে কোন রুটে ড্রিমলাইনার ফ্লাই করবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, কয়েকটি রুট নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন। দু’একদিনের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত হবে।  

সূত্র জানায়, চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার ২১ আগস্ট বিমানের বহরে যুক্ত হবে। এর আগে ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার একটি অগ্রবর্তী দল উড়োজাহাজটির খুঁটিনাটি যান্ত্রিক বিষয়গুলো যাচাই করে নেবেন। দেশের আসার পর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, উড়োজাহাজের রেজিষ্ট্রেশনসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ করতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগবে। এসব প্রক্রিয়া শেষে ১ সেপ্টেম্বর ড্রিমলাইনার দিয়ে প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

দূরপাল্লার রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্যই ২০০৮ সালে বিমান চারটি ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার চুক্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং এর সঙ্গে। বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ড্রিমলাইনার দিয়ে নিউইয়র্কসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া টোকিও, রোম, ম্যানচেস্টার রুটসমূহ পুনরায় চালুর ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। 

এদিকে ড্রিমলাইনার পরিচালনার জন্য ১৪ জন জৈষ্ঠ্য বৈমানিককে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে ইন-ফ্লাইট সার্ভিসের জন্য তৈরি করা হচ্ছে এক ঝাঁক কেবিন ক্রু। ড্রিমলাইনারের দ্বিতীয় উড়োজাহাজটি নভেম্বরে এবং বাকি দুটি আসবে আগামী বছরের (২০১৯) নভেম্বরে। 

এই বৈমানিকেরা সবাই সিঙ্গাপুরে বোয়িংয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নেবেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে তৈরি হবেন, স্বপ্নের বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ চালনায়। অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ হওয়ায় তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানেরও দরকার আছে। কেবিন ক্রুদের সেসব প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই উড়োজাহাজের বসেই যাত্রীরা বিশেষ এক ধরনের ফোনসেটের মাধ্যমে আকাশে ভ্রমনকালীণ সময়েই ফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। ফোনে কথা বলা ছাড়াও রিয়াল টাইম লাইভ দেখা যাবে জনপ্রিয় নয়টি টেলিভিশন চ্যানেলের। এতে রয়েছে বিশ্বের আধুনিক সব বিনোদনের ব্যবস্থা। ড্রিমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে দেখা যাবে ব্লকবাস্টার মুভি। শোনা যাবে গান, থাকছে ভিডিও গেমস। ড্রিমলাইনারের রাতের ফ্লাইটের পরিবেশ হবে নির্জন ও শান্ত। ফ্লাইটের ভেতরের পরিবেশ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলবে আলো।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রথম বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি এখন সিয়াটলে বোয়িং ফ্যাক্টরির পেইন্টিং হ্যাঙ্গারে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চারটি উড়োজাহাজের নাম দিয়েছেন। নামগুলো হচ্ছে; আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস। ড্রিমলাইনার টানা ১৬ ঘন্টা ফ্লাই্ করতে পারে।

সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট ওফর দিয়ে উড়তে সক্ষম দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই উড়োজাহাজ বিশ্বের যে প্রান্তে থাকুক না কেন ঢাকায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সময় সময় এর যোগাযোগ থাকবে। এটি বোয়িং ৭৬৭ উড়োজাহাজের চেয়ে ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। উড়োজাহাজটিতে মোট আসন রয়েছে ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসের আসন ২৪টি। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর