অনলাইনেই সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,ঢাকা | 2023-08-23 16:51:54

পরিবর্তনশীল ডিজিটাল যুগে অনলাইনেই সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ দেখছেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, পৃথিবী তো পাল্টাচ্ছে, এখন ডিজিটাল যুগে আমরা প্রবেশ করেছি। আমরা সংবাদপত্রকে ওখানে কেন স্থানান্তর করছি না? যদি সত্যিকার অর্থে ভালোভাবে স্থান দখল করতে পারি, আমাদের অধীনে নিয়ে আসতে পারি, অনুকূলে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ অনেকদূর যেতে পারে।

সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র নিজ কার্যালয়ে ‘টিআইবি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেছেন, সব সাংবাদিকতাই আসলে অনুসন্ধানী, কারণ শোনা কথায় তো সংবাদ হয় না। অনুসন্ধান করেই সংবাদ বের করতে হয়। আর প্রতিকূল অবস্থার কারণে অনুসন্ধানের দরকার হয়।

তিনি বলেন, টিআইবি অনুসন্ধানী কাজ করে। যার কারণে এ পর্যন্ত আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের তুলোধুনো করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দাঁড়িয়ে আছি। নতি স্বীকার করিনি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ভিত্তিটা খুব নৈতিক, যেখানে ন্যায়ের প্রসঙ্গ আসে, নীতির প্রসঙ্গ আসে।

আলোচকদের মধ্যে অনেকেই অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সংবাদপত্র হুমকির মুখে বললেও তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম।

সাংবাদিকতাকে শুধুমাত্র পেশা হিসেবে নয় প্যাশন হিসেবে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিকতাকে একটা চাকরি হিসেবে করছি। প্যাশন হিসেবে নিচ্ছি না। এ সময় তিনি শিক্ষকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে আমার লজ্জা হয়, যখন আমাদের সহকর্মীদের দেখি ছাত্রনেতার ধমক খেয়ে চুপ হয়ে যেতে।

তিনি বলেন, আগে শিক্ষক সমিতিকে সব সরকারই ভয় পেত। আমি অনেকবার শিক্ষক সমিতির নেতা হয়েছি। সরকারি দলের লোক আমাদের কাছে জানতে চাইত আপনাদের পরিকল্পনা কী? এতোখানি তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকত। আজকাল শিক্ষক সমিতি একেবারেই সরকারের তল্পিবাহক। পেশাগত দাবি আদায় করার ক্ষেত্রেও একতা নেই। আমরা এখন সচিবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য নেমেছি। শিক্ষকতাকে চাকরি হিসেবে না নিয়ে আদর্শিক জায়গায় থাকতে হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিকূলতার মধ্যেই আমাদের টিকে থাকতে হবে। টিকে থেকেই আমাদের কাজ করতে হবে। সাংবাদিক আর আমরা একই পথের পথিক। কেননা যখন কেউ সরকারে থাকে তখন তারা আমাদের ‘হেইট’ (ঘৃণা) করেন, আর যখন বিরোধী দলে থাকেন তখন আমাদের ‘লাভ’ (ভালবাসেন) করেন। আমরা সেই অর্থে একই পথের পথিক। তবে আমরা কখনো কম্প্রোমাইজ করি না, টিআইবি করে না, আপনারাও (সাংবাদিকরাও) করবেন না।

টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে আরও কথা বলেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক আফসান চৌধুরী, সাংবাদিক জুলফিকার মানিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবি’র আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন (পরিচালক) শেখ মনজুর ই আলম।

টিআইবি’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এ বছর ১০ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীরা হলেন প্রিন্ট মিডিয়া (জাতীয়) ক্যাটাগরিতে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ফখরুল ইসলাম, প্রিন্ট মিডিয়া (স্থানীয়) ক্যাটাগরিতে যশোরের গ্রামের কাগজ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি দেওয়ান মোর্শেদ আলম, প্রধান প্রতিবেদক এম আইউব, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ফয়সাল ইসলাম ও মোতাহার হোসাইন, নিজস্ব প্রতিবেদক এস এম আরিফ, উজ্জ্বল বিশ্বাস, মিনা বিশ্বাস এবং স্বপ্না দেবনাথ এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া (টিভি রিপোর্ট) ক্যাটাগরিতে চ্যানেল ২৪ এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ইকবাল আহসান। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক মিডিয়া (টিভি ডকুমেন্টারি) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুসন্ধান দল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর