দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে আজকের এই দিনে বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে বাঙালি জাতি। আর এই বিজয়ের পথে রক্ত ঢেলেছেন ৩০ লক্ষ শহীদ। ২ লক্ষ মা-বোন হারিয়েছেন সম্ভ্রম। প্রতিবছরের ন্যায় গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বিজয়ের এই দিনে গোটা দেশ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছে। শহীদদের স্মরণে ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
ঝিনাইদহে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সদর থানা চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। এরপর জেলা আওয়ামী লীগ তাদের নিজ কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পটুয়াখালীতেও ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা হয়। পরে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। এরপর একে একে জেলা প্রশাসক, নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও, শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে পুলিশ, বিএনসিসি, স্কাউট, রোভার, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
কুষ্টিয়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ৯টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বিজয় দিবসের উদ্বোধন করা হয়।
এছাড়াও শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত, কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গায় তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিনের সূচনা হয়। পরে শহরের হাসান চত্বরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পতাকা উত্তোলনের পর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক সংগঠনসহ সরকারি বেসরকারি সংগঠনগুলো শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সকাল ৮টায় চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াচ প্রদর্শন করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গার্লস গাইড, বিএনসিসি, স্কাউট, শিশু পরিবারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা।
বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সূর্যোদয়ের পর থেকেই নগরের চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজার হাজার মানুষ ফুল দিয়ে বীর শহীদ ও জাতীয় বীরদের শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া সিলেটের সকল উপজেলায় ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো, কুচকাওয়াজ, র্যালি, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস।
ভোলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলকে সকাল থেকেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ শহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে, ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশালে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে দিনের প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মুক্তিযোদ্ধারা।
সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
কুড়িগ্রামে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফুল দিয়ে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানায়।
বিজয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠে কুচকাওয়াজ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, হাডুডু, ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল টুর্নামেন্ট, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারদের সংবর্ধনা, চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
নীলফামারী শহরের চেরঙ্গি মোড়ে স্বাধীনতা স্মৃতি স্তম্ভে বীর শহীদদের প্রতি পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
শিল্পকলা একাডেমিতে পোস্টার ও পুস্তক প্রদর্শনী এবং নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করা হয়।
রংপুরের পীরগাছায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মনোজ্ঞ ডিসপ্লের আয়োজন করা হয়।
দুপুরে উপজেলার জেএন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রায় ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
এদিকে, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন, বিজয় শোভাযাত্রা, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও প্রীতি ভলিবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।
নোবিপ্রবিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিজয় দিবস উপলক্ষে রাত থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শোভাযাত্রা বের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ‘মরণসাগর’র পাদদেশে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনীর আয়োজন করে জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কনফারেন্স হলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারবর্গকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।