পৌষের শুরুতেই রাজধানীসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে হাড় কাঁপানো শীত। গত কয়েকদিনের কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারাদিনেও মিলছে না সূর্যের দেখা। পাশাপাশি ঘন কুয়াশাও পড়ছে। দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। জীবিকার তাগিদে শীতের তীব্রতাকে উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষদের।
এদিকে, হাড় কাঁপানো শীতে প্রাণিকূলেরও জবুথবু অবস্থা। তীব্র শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিরাও নাকাল হয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে শীতের তীব্রতায় বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ঠান্ডা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বীজতলা ‘কোল্ড স্ট্রোকে’ বিনষ্টের দুশ্চিন্তা করছেন তারা। এছাড়া যারা আলু ও সরিষার আবাদ করেছেন তারাও চারা নষ্টের আশঙ্কা করছেন।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরের পর সূর্যের দেখা পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। তবে মেঘের আড়ালে এখনো দেখা মেলেনি সূর্যের। শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে যশোর, রাজশাহী, পাবনা তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ। রোববার এসব জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি থেকে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শনিবার ফরিদপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোববার থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে। শীতের প্রকোপও কমবে। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২৫ অথবা ২৬ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এরপর আবার ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এছাড়া জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নতুন করে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সে সময় তাপমাত্রাও অনেকটা হ্রাস পেতে পারে।’
রোববার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।
রাজশাহী, পাবনা, যশোর, তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। ঢাকায় বাতাসের গতি উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।