প্রাণপ্রিয় নেতার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল মানুষ

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 14:23:44

১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলেও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকায় স্বাধীনতা তখনও পূর্ণতা পায়নি, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বাংলার মানুষের মুখে বিজয়ের হাসি, কিন্তু অশ্রুভারাক্রান্ত। অধীর আগ্রহে এ দেশের মানুষ অপেক্ষা করেছে কখন ফিরে আসবেন তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা। মানুষেরা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ১০ জানুয়ারি প্রাণপ্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে তারা সেই বেদনা ভুলে গিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জাতির পিতার নির্দেশ মোতাবেক সমগ্র জাতি যুদ্ধ শুরু করে।

তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খানের পতন হয়, ভুট্টো ক্ষমতায় আসেন। এরপর জাতির পিতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনা উদ্বোধন কালে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন। চারদিকে মানুষের বিজয়ের হাসি। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে শেখ মুজিবের জন্য। যেদিন তিনি ফিরে এলেন (১০ জানুয়ারি) সেদিন বাঙালি আনন্দে ভেঙে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনের বেশির ভাগ সময় বঙ্গবন্ধু জেলে কাটিয়েছেন। বাংলার মানুষের জন্য কষ্ট করেছেন। তার নেতৃত্বেই ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

জাতির পিতার স্মৃতিচারণ করে এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনার উদ্বোধন করেন।

ক্ষণগনণার মুহূর্তটি সাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী আয়োজনের মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিবকে বহনকারী উড়োজাহাজটি পুরাতন বিমানবন্দরে (জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড) অবতরণ করেছিল। সেজন্যই প্রতীকী একটি উড়োজাহাজ অবতরণের বিষয়টি যুক্ত করা হয় অনুষ্ঠানে।

বিকেল ৪টা ৩৫মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী উড়োজাহাজ (সি-১৩০জে) অবতরণ করে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে। ৪টা ৪৫মিনিটে প্লেনটি ট্যাক্সি করে টারমাক এলাকায় পৌঁছানোর পর দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ২১বার তোপধ্বনি করা হয়। ৪টা ৫০ মিনিটে প্লেনের দরজা খোলা হলে ১৫০ শিক্ষার্থীর একটি দল স্বাগত জানায়। লেজার লাইটের মাধ্যমে দরজার কাছে আলোকিত করা হয় এবং আলোটি ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে লাল গালিচার মাথায় এসে থামে।

এরপর বিকাল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষণগণনার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করেন তিনি। মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা উপলক্ষে প্রায় ১২ হাজার মানুষ পুরাতন বিমানবন্দরে উপস্থিত রয়েছেন। আগ্রহী ব্যক্তিরা অনলাইনে নিবন্ধনও করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন।

মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি দেখতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড এলাকায় সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভিড় করেন। প্যারেড গ্রাউন্ডের প্রবেশ পথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঐতিহাসিক মুহূর্তটির সাক্ষী হতে সাধারণ মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশের জন্য শুক্রবার দুপুর থেকে অপেক্ষা করেন।

ক্ষণগণনার জন্য দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি স্থানে এবং প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলায় ঘড়ি বসানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার ৮৩টির বেশি স্থানে ক্ষণগণনার ঘড়ি বসানো হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর