১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অসাধারণ ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন তৎকালীন দুই তরুণ বাঙালি কূটনীতিক। তারা হলেন— নয়াদিল্লিস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি কে এম শিহাবুদ্দিন ও অ্যাসিস্টেন্ট প্রেস অ্যাটাচি আমজাদুল হক।
তারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে সর্বপ্রথম কুটনীতিকের পদ ছেড়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি কে এম শিহাবুদ্দিনের অসুস্থ স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং মুক্তিযুদ্ধে দুই কূটিনীতিকের অবদানের কথা তুলে ধরেন তিনি।
ড. মোমেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি কে এম শিহাবুদ্দিনের স্ত্রী বুলবুলের অসাধারণ অঙ্গীকারের কথাও স্মরণ করেন।
মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হওয়ার আগেই কে এম শিহাবুদ্দিন ও আমজাদুল হকের নয়াদিল্লিতে এক প্রেস কনফারেন্স করে স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের কথা চিন্তা না করে লোভনীয় কূটনীতিকের পদ ছেড়ে দেন এবং পাকিস্তান সরকারের অন্যায় অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানান। এ ঘটনা সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তাদের অনুসরণ করে সেই সময় ১৯টি দূতাবাসের ১১৫ জন বাঙালি কূটনীতিক বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগরে গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।
কে এম শিহাবুদ্দিন ৫ বছর পূর্বে মারা গেছেন এবং আমজাদুল হক বর্তমানে অসুস্থ। ইতোপূর্বে কে এম শিহাবুদ্দিনকে মরনোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার এবং আমজাদুল হককে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।