বিদেশি লবিস্টদের পেছনে অর্থব্যয় আর ঘরে বসে দোষ খোঁজা বাদ দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিএপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবন থেকে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, 'বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশের এক-তৃতীয়াংশের মানুষকে যখন সরকার সহায়তা দিচ্ছে, তখন বিএনপি ঘরে বসে এসকল কাজের দোষ খোঁজায় ব্যস্ত। চিরাচরিত এ অভ্যাস থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি। তাদের সিনিয়র নেতারা কয়দিন ধরে নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু তারা (বিএনপি) জনগণের পাশে কোথায়! শহরে-গ্রামে কোথাও তাদের নেতা-কর্মীরা জনগণের পাশে নেই৷ তারা শুধু ঢাকা শহরে কয়েকটা লোক দেখানো ফটোসেশনে ব্যস্ত। আর সেই ফটোসেশন করতে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা ছাড়া আর কিছু নেই।'
ত্রাণে অনিয়মের বিচার তৎক্ষনাৎ মোবাইল কোর্টে করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'হাতে গোণা ত্রাণে অনিয়মের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে বিএনপি যে কথা বলছে, তাতে তাদেরকে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখতে বলবো। তারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়ে পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল, যেকারণে তাদেরকে অনেকে 'বিশ্বচোর' বলেন। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা ঠেকাতে বিদেশি লবিস্টদের পেছনে লাখ লাখ ডলার খরচ করেছে। জনগণের অনেকের ভাষায় যারা 'বিশ্বচোর', তাদের উদ্দেশে বলবো, বিদেশি লবিস্টদের পেছনে লাখ লাখ ডলার খরচ না করে সেই টাকা জনগণের জন্য খরচ করুন।'
'আর ত্রাণে অনিয়ম সরকারের পুলিশই উদঘাটন করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে, বেসরকারি পুলিশ নয়' উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সিটি করপোরেশন- জেলা- উপজেলা- ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায় পর্যন্ত সবমিলে ৭২ হাজারের মতো স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি রয়েছে। এরমধ্যে ৪৫টি মামলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার ১ জন চেয়ারম্যান ও ২ জন মেম্বারকে বরখাস্ত করেছে, যা আনুপাতিক হারে ২ হাজারের মধ্যে একটি ঘটনা, যদিও একটি ঘটনাও কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, এধরণের অনিয়মের সাথে জড়িতদের আগে মোবাইল কোর্টে বিচার হবে, পরে নিয়মিত মামলা।
বেগম জিয়ার মুক্তি কভার করতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীর করোনায় আক্রান্তের খবরের প্রতিক্রিয়ায় ড. হাছান উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, 'করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যেখানে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের জনসমাগম অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে, সেখানে বেগম জিয়ার মুক্তিকালে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জমায়েত করে বিএনপি যে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে, তার দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে।'
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্তর্ভুক্ত বিশাল জনগোষ্ঠীর বাইরেও যারা খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের জন্য এ করোনা পরিস্থিতিতে ত্রাণ মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৬৬ হাজার মেট্রিক টন চাল, ২৫ কোটি টাকা নগদ ও শিশুখাদ্যের জন্য পৃথক ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।