মরদেহ ধরেনি কেউ, দাফন করল শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠন

, জাতীয়

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) | 2023-09-01 18:05:46

ছেলের ঘরে নাতি হয়েছে। সবাই হাসপাতালে ব্যস্ত। এদিকে বৃদ্ধ বাবা কুয়েত প্রবাসী ছালেহ আহমদ ঘরে মরে পড়ে আছেন। কারও খবরও নেই। তার একমাত্র বড় ভাই নুর আহমদ মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে আসেন। ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে বুধবার (৩ জুন) ভোরে গ্রামে আসেন তিনি।

স্ত্রী সন্তান পরিবারের কেউ সঙ্গে না আসায় বাড়ির লোকজন হঠাৎ মরদেহ দেখে করোনা রোগী ভেবে মুহূর্তে সবাই পালিয়ে যায়। সারাদিন মৃত ছালেহ আহমদের মরদেহ উঠানে রোদ বৃষ্টিতে চৌকির উপর পড়ে থাকে। তারপরও কেউ আসেনি।

ঘটনাটি ঘটে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের সাহেবপুর কালা বক্স বাড়িতে।

খবর পেয়ে ৫ নং ওসমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল আলম ছাত্তার শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের উপদেষ্টা ডা. এস এ ফারুককে বিষয়টি জানান। বিকেল ৫টায় সংগঠনের সদস্যরা নুর আহমদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের অনুরোধে মরদেহ গোসল ও দাফন-কাফন সম্পন্ন করেছে।

জানাজায় সহযোগিতা করেছেন এলাকার একমাত্র ব্যক্তি জাহাঙ্গীর, ইউনিয়ন যুবলীগকর্মী মেজবা উল আলম ছাত্তার, সিরাজ, রাসেল, তুসার ও ছাত্রলীগকর্মী এরফানুল করিম। জানাজায় ইমামতি করেন হাফেজ রেজাউল করিম।

শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের উদ্যোক্তা মিরসরাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক নুরুল আলম দুঃখ প্রকাশ করে জানান, কার জন্য দুনিয়ার এত আয়োজন, সারাজীবন নিজের সমস্ত চাহিদা প্রয়োজনকে গুরুত্বহীন মনে করে পরিবার স্ত্রী সন্তানদের জন্যে লোকটি এতকিছু করেছে। তারা আজ কোথায়? এলাকার লোকজন কেন পাশে নেই উনারতো করোনা হয়েছে কিনা সেটাও নিশ্চিত নয়।

তিনি আরও জানান, মিরসরাইয়ে যদি কোনো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান আর সামাজিক ভাবে যদি ঐ মৃত  ব্যাক্তির লাশ দাপন করতে অনিহা প্রকাশ করে তাহলে বারইয়ারহাট শেফা ইনসাফ হাসপাতালের পরিচালক ও শেষ বিদায়ের বন্ধুর সংগঠক ডা. এস এ ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। যদি মৃত ব্যক্তির কবরের জায়গা নিয়ে কোনো সমস্যা থাকে তাহলে ডা. এস এ ফারুকের পারিবারিক কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর