ঢাকা: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইতিহাসের অংশ হয়ে গেল বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ ৮০০ উড়োজাহাজ। আর এই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলেন ফার্স্ট অফিসার আনিতা রহমানও। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে কোনো যাত্রা বিরতি ছাড়াই আকাশবীণা নামের এই উড়োজাহাজটি টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় আসে। এ সময় দেশের প্রথম নারী পাইলট হিসেবে এটি উড়িয়ে আনেন আনিতা।
জ্বালানি সাশ্রয়ী এই উড়োজাহাজ চালনার জন্য রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স ১৪ জন ক্যাপ্টেনকে চূড়ান্ত করেছে। তালিকায় স্থান পাওয়া সবাই জাতীয় এয়ারলাইন্সের সবচেয়ে দক্ষ ও জৈষ্ঠ্য বৈমানিক। এছাড়া সহ-বৈমানিক হিসেবে প্রশিক্ষণের তৈরি হয়েছেন আরো ১০ জন ফার্স্ট অফিসার। এদের মধ্যে আনিতা সেই সৌভাগ্যবান নারী পাইলটদের একজন যে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি সিয়াটল থেকে ঢাকায় উড়িয়ে আনার সুযোগ পেয়েছেন। অানিতার সঙ্গে হিসেবে ছিলেন ক্যাপ্টেন ফজল। এটি (বিজি-২৮০১ ফ্লাইট) রোববার বিকেলে ঢাকায় এসে পৌছে। এটি রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বিমানের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টিতে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, উড়োজাহাজটি প্রশান্ত মহাসাগর পার হয়ে রাশিয়া, চীন, মিয়ানমারের আকাশসীমা পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। উড়োজাহাজটি প্রশান্ত মহাসাগর পার হয়ে প্রথমেই রাশিয়ার আকাশে ঢোকে। রাশিয়ার দীর্ঘ আকাশপথ পেরিয়ে এটি প্রবেশ করে চীনের আকাশে। রোববার বিকেল তিনটায় এটির অবস্থান ছিল চীনের চীনের আকাশে। এরপর এটি প্রতিবেশী মিয়ানমার হয়ে দেশের আকাশসীমায় ঢোকে।
এর আগে সিয়াটল থেকে প্রথম বোয়িং ৭৭৭ ৩০০ ইআর উড়োজাহাজ বোয়িংয়ের বৈমানিকেরাই ঢাকায় নিয়ে আসেন। কারণ তখন এদেশীয় পাইলটরা প্রশিক্ষিত ছিলেন না। এবার উড়োজাহাজ আসার আগেই এক ঝাঁক পাইলটকে ড্রিমলাইনার চালনার জন্য প্রস্তুত করেছে। বাংলাদেশী পাইলট ছাড়াও বোয়িংয়ের ক্যাপ্টেন রিচার্ড এম ডেনটন এবং ক্যাপ্টেন চার্লি ক্রিস্টেনসনও ফ্লাইট পরিচালনা করেন।
উড়োজাহাজটির ককপিটে পাইলটদেও জন্য রয়েছে নতুনত্ব। ফ্লাইট পরিচালনা সংক্রান্ত কোনো কাজে পাইলটদের অযথা কাগজ নষ্ট করতে হবে না। এটি একটি পেপারলেস উড়োজাহাজ সেখানে থাকছে হেডআপ ডিসপেন্ট। এর মাধ্যমে চোখের সামনের প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পারবেন পাইলটরা। সার্বক্ষণিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঢাকায় বিমানের ফ্লাইট অপারেশন রুমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এটি। এর মাধ্যমে উড়োজাহাজের ইঞ্জিন, ককপিট, ফুয়েল, নেভিগিয়েশনসহ সব তথ্য জানতে পারবেন ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তারা। যেকোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তারা অপারেশন রুম থেকে পাইলটকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারবেন। এজন্য ঢাকায় বিমানের প্রধান কার্যালয়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সার্ভার স্থাপন করা হয়েছে।