দুই বছর ধরে বন্ধ নরসিংদীর আমীরগঞ্জ রেলস্টেশন, মানুষের ভোগান্তি
দ্রুত গতিতে নরসিংদীর আমীরগঞ্জ স্টেশন অতিক্রম করছে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন। নেই কোনো সতর্কবার্তা। নেই লাল-সবুজ সংকেতবাহী পতাকা দেখানোর মতো কোনো কর্মচারী। আর এভাবেই দুই বছর ধরে চলছে এই স্টেশনটি। ফলে একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষ বলছে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
নরসিংদীর বৃহত্তর রায়পুরা উপজেলার অন্যতম বৃহত্তম রেল স্টেশনের নাম আমীরগঞ্জ। প্রায় ৯টি ইউনিয়নের দশ লাখ মানুষের বসবাসের এলাকার অধিকাংশ মানুষের জন্য ঢাকা, নরসিংদী ও ভৈরব যাতায়াতের সহজলভ্য যাতায়াত ব্যবস্থা ট্রেন। ২০২২ সালের ৩১ জুলাই এবং ৪ আগস্ট স্টেশনে ২টি সিগন্যাল মোটর চুরি হয়। ফলে দেয়া যাচ্ছে না ট্রেন সিগন্যাল, জ্বলছে না কোনো লাল-সবুজ বাতি। আর মোটর না থাকা এবং স্টেশনের কোনো লোকবল না থাকায় ১২ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় স্টেশনটি।
এ কারণে মাত্র দুটি ট্রেন প্লাটফর্মের পাশে থামার কথা থাকলেও সেগুলো থামছে ডিরেক্ট লাইনে। আর যাত্রী ওঠা-নামার জন্য সময় মাত্র এক থেকে দেড় মিনিট। এই অল্প সময়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এতে স্টেশনের দুই পাশে অবৈধ রেলক্রসিং দিয়ে যানবাহন পারাপার হতে গিয়ে সম্প্রতি ঘটে গেল বেশ কয়েকটি বড় রকমের দুর্ঘটনা। এদিকে, স্টেশন মাস্টার না থাকায় কক্ষে ঝুলছে তালা, টাঙানো রয়েছে স্টেশন বন্ধের নোটিশ। এতে যাতায়াতের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আশপাশের লক্ষাধিক মানুষের। একই সাথে স্টেশনে দায়িত্বরত কেউ না থাকায় দখল হচ্ছে রেলের সম্পত্তিও।
স্থানীয়দের পক্ষে আমীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল সরকার জানান, এই এলাকা একটি শিল্পাঞ্চল এলাকা। যুগ যুগ ধরে এখানকার মানুষ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে নরসিংদী, ঢাকা ও ভৈরব যাতায়াতের জন্য ট্রেন ব্যবহার করে আসছে। সম্প্রতি স্টেশনের সিগন্যালের মোটর চুরির অজুহাতে দুই বছর ধরে স্টেশন মাস্টার নেই। এছাড়া কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী নেই এটা হতে পারে না। আমরা দ্রুত স্টেশনে মাস্টার ও অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে স্টেশনটি পূর্ণাঙ্গরুপে চালুর দাবি জানাই। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।
স্টেশনটি পূর্ণাঙ্গরুপে চালু করার বিষয়ে স্থানীয়রা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও কোনো কাজ হয়নি। আগামী ১৫ দিনে স্টেশনটি চালু না হলে ডাক দেবেন বৃহত্তর কর্মসূচির।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার যুগ্ম মহা-পরিচালক (অপারেশন) এ এম সালাহ উদ্দীন জানান, স্টেশনটি চালুর বিষয়ে কাজ চলছে, তবে কিছুটা সময় লাগবে। এছাড়া স্টেশনে অবৈধভাবে দখলের বিষয়ে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
স্টেশন মাস্টার ও অন্যান্য লোকবল এবং সিগন্যাল সমাধান করে পূর্ণাঙ্গরূপে স্টেশনটি শীঘ্রই চালু হবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।