বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতিতে সেরা ছিল, এখন কিন্তু বেরিয়ে এসেছি। আমাদের হাতে দেশের মান-ইজ্জত, আমরা ভালো থাকলেই দেশ ভালো থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
শনিবার (৪ জুন) বিকেলে বিপিএমআই (বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট) বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ৬০ দিনব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন ডেসকোর ৩২ জন প্রকৌশলী।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশের ডিগ্রি বিদেশে অনেক জায়গায় ভ্যালু নাই। এখানে মর্যাদাপূর্ণ কোর্স করতে হবে। অনেক জায়গায় বিদেশি প্রকৌশলীকে নিতে হচ্ছে। ইপিসি ঠিকাদার নিতে হচ্ছে। কোর্সের মান ওয়ার্ল্ড ক্লাস হতে হবে। আমরা স্বনির্ভর হতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকৌশলীরা আউট অবদি বক্স হতে পারেন না। এসব বিষয়ে তাদেরকে ট্রেন্ডআপ করতে হবে। যাতে তারা দক্ষ ব্যবস্থাপক হিসেবেও গড়ে ওঠেন। অনেক কর্মকর্তার ইলেক্ট্রিসিটি আইন-২০১৮ সম্পর্কে ধারণা নেই। কোর্সে আইনের বিষয়ে বেসিক ধারণা দিতে হবে।
তিনি বলেন, সোনার বাংলা কিন্তু এখন স্পষ্ট। আপনারা যারা নতুন যুক্ত হচ্ছেন। তারা কিন্তু উন্নত বাংলাদেশ দেখতে পাবেন। উন্নত দেশ কেমন হয় সে বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে। জাতির জনক বলেছেন সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন। প্রত্যেক ঘরেতো সোনা থাকবে না, তবে সোনার ছেলে থাকবে। করোনার কারণে আগামী বছরগুলোতে একটা প্রভাব পড়বে। আমি দেখেছি প্রকৌশলীরা কাস্টমার সার্ভিস বিষয়ে অনেকে দুর্বল। এবারের বিদ্যুতের বিল নিয়ে অনেকে কর্মকর্তা বাজে ব্যবহার করেছে। ব্যবহার জানতে হবে, হেসে কথা বলা ও বিরক্ত হয়ে কথা বলা আরেক রকম।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, আপনারা যে জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন। এই শুরুর পেছনে পূর্বসূরীদের অনেক অবদান রয়েছে, এটা মনে রাখতে হবে। পাওয়ার সেক্টরে রিস্ট্রাকচারিং শুরু করেন বঙ্গবন্ধু নিজে। তখন ওয়াপদাকে ভেঙে বিপিডিপি করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢেলে সাজিয়েছেন। আপনাদের আজকে এই পর্যায়ে আসতে দেশ ও আপনার বাবা-মার অনেক অবদান রয়েছে। এখন দেশকে দেওয়ার সময় এসেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, উচ্চ শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তোমরা যদি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চাও সহযোগিতা করা হবে। নতুন টেকনোলজির মাধ্যমে কিভাবে সেবা দিতে পারি। সেদিকে মনোযোগ থাকতে হবে।
বিপিএমআই’র প্রকল্প পরিচালক ও রেক্টর মাহবুব-উল আলম বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা বেশি। এই ক্ষমতাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে দক্ষ জনবলের বিকল্প নেই। বিপিএমআই দক্ষ জনবল তৈরির কাজ শুরু করেছে। করোনার কারণে কিছুটা ব্যহত হলেও শেষ পর্যন্ত সফলভাবেই সমাধা করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কিছু ডিপ্লোমা করতে পারি কিনা। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে কিছু কোর্স করার আলোচনা চলছে। সেখানে গেলে যে ফি গ্রহণ করে, এখানে কম ফিতে ভালো ব্যবস্থাপক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে। এই কাজগুলো করতে পারলে বিদ্যুৎ খাতে দক্ষ লোকের অভাব বলে কিছু থাকবে না।
ভার্চুয়াল এই সভায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান মাকছুদা খাতুন, কোর্স পরিচালক রফিকুল ইসলাম, প্রশিক্ষণার্থী আবির সাফি বিন্দু ও নিরূপম দাশ। অন্যদের মধ্যে অংশ নেন ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।