আশুলিয়ায় সড়কে চলছে নৌকা, দুর্ভোগে শ্রমিকরা

, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-24 13:37:37

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছে বন্যা। বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানি উঠেছে উঁচু আরসিসি ঢালাই রাস্তায়। তাই ঢালাই করা রাস্তায় বানভাসিদের যোগাযোগের মাধ্যম এখন নৌকা।

শিল্পাঞ্চল সাভারের আশুলিয়ায় অনেক শ্রমিক কলোনিতে পানি উঠেছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে রাস্তাও। ফলে বিপাকে পড়েছে এখানকার হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক। সকালে কারখানায় কাজে যেতে কেউ নিচ্ছে দুটি করে পোশাক। কেউবা যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে পাকা রাস্তায় ব্যবহার করছে নৌকা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার কাইচাবাড়ি আঞ্চলিক সড়কে দেখা মেলে এমন দৃশ্য। শ্রমিকরা নৌকা করে রাস্তা পাড়ি দিয়ে যাচ্ছে কারখানায়।

শ্রমিকরা নৌকা করে রাস্তা পাড়ি দিয়ে যাচ্ছে কারখানায়

এই রাস্তার ওপর দিয়েই নৌকায় করে কারখানার উদ্দেশে রওনা করেছেন আছিরন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের বাসার নিচতলায় পানি ওঠায় শ্রমিকরা বাসা পরিবর্তন করেছে। আমরা থাকি ৩ তলায়। আমাদের রুমে পানি ওঠার সম্ভাবনা নাই। কিন্তু কাজে যেতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।

অপর শ্রমিক আলেঢা বলেন, কারখানায় যাওয়ার সময় দুই সেট পোশাক নিয়ে বের হই। ভিজে কারখানায় গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে কাজ শুরু করি। ফেরার সময় আবার ভিজেই বাসায় চলে যেতে হয়। এই পানিতে অত্যধিক ময়লা। পানি থেকে উঠতেই শরীর চুলকাতে থাকে। আমরা খুবই কষ্টে আছি।

আরেক শ্রমিক স্বপন বলেন, সকালে অনেক ভিড় হয় এই রাস্তায়। সড়কে আগে অটোরিকশা চলতো। কিন্তু পানি অনেক বেশি হওয়ায় এখন রিকশা চলতে পারে না। সকালে নৌকা পেলে ভিজতে হয় না। নৌকা না পেলেই ভিজে কারখানায় যেতে হয়। শ্রমিকদের সুবিধার জন্য এই সড়কে চলাচলের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এই ময়লা পানিতে বেশি দিন চলাচল করলে আমাদে পায়ে ঘায়ের সৃষ্টি হবে। এখনি অনেকের পায়ে ঘায়ের মতো উঠেছে।

ময়লা পানিতে শরীর চুলকাতে থাকে

বাড়ির মালিক মনির বলেন, বন্যায় পানি প্রবেশ করলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। বরং নিচতলার বাসা খালি হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ শ্রমিকরা টাকাও পায় না। অনেক সময় ঘরভাড়া ছেড়ে দিতে হচ্ছে। তাদের সুবিধার জন্য যেকোন বাসায় রুম ভাড়া নিচ্ছে। আমরা বাঁধা দিচ্ছি না। কারণ আমরা সবাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, এই সময় আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিশুদ্ধ পানি পান করাতে সব ধরনের ব্যবস্থা করা। এসময় ডায়রিয়া, জন্ডিসসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। আক্রান্ত হলে আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ আছে সেখান থেকে সংগ্রহ করবে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করে দিয়েছি, যারা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন। এছাড়া যেকোন প্রতিকূল অবস্থায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

এব্যাপারে ধামসোনা ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন মন্ডল বলেন, বন্যার সুযোগ নিয়ে সাবেক এক জনপ্রতিনিধি ওই সড়কে স্যালো ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তবে সেখানে বন্যা দুর্গত ২০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করেছেন বলে জানান। একইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর