আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী কর্মীরা এসেছেন রকমারি সাজে। এরই ধারাবাহিকতায় নেত্রকোনার সিদ্দিক মিয়া ঢাকার রাজপথ ঘুরে বেড়াচ্ছেন নৌকায় বসে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন টিএসসি মোড়ে দেখা মেলে ৭২ বছর বয়সী সিদ্দিক মিয়ার সঙ্গে। কৌতূহলী মানুষ ভিড় করছেন তার ভ্যানের সামনে।
দুই সন্তান আশিক আর আরিফকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানের উপর নৌকা বানিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপস্থিত হন তিনি। এটাই তার নেশা ও ভালোলাগা। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনেও হাজির হয়েছেন এই কর্মী। গায়ে ময়লা হয়ে যাওয়া সাদা পাঞ্জাবি। তার উপরে মুজিব কোট পরতে ভুলেননি সিদ্দিক মিয়া। ৮-১০ বছর বয়সী দুই সন্তানকেও একইভাবে সাজিয়ে এনেছেন। দুজনের হাতে দুটি বৈঠা। ভ্যানের উপরে নৌকা রাখা। নৌকার হাল ধরেছেন সিদ্দিক মিয়া নিজেই। ভ্যান চালিয়ে রাজপথ ধরে এগিয়ে চলেছেন। গন্তব্য সম্মেলন স্থল। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট।
ভ্যান চালিয়েই নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। সম্মেলন শেষ হলে আগামীকাল আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। এভাবেই দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ান আওয়ামী লীগের এই স্বেচ্ছাকর্মী।
তিনি জানান, কৃষি কাজ করে সংসার চলে। ছয় সন্তানের জনক তিনি। ২০১৩ সালে ৩১ হাজার টাকা খরচ করে ভ্যানের উপরে নিজ উদ্যোগে এই নৌকা বানিয়ে ছিলেন।
সিদ্দিক মিয়া বলেন, ১৯৭৪ অথবা ৭৫ ঠিক মনে নেই। নেত্রকোনা সরকারি কলেজে সমাবেশের সময় জনতার ভারে স্কুলের ছাদ ধসে পড়ে আমার মাথায় ও পায়ে আঘাত লেগেছিল। ওই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তখন নেতাকর্মীরা আমাকে ধরে উনার সামনে নিয়ে যান। তখন আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। এ সময় বঙ্গবন্ধু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ওরাই আসল দেশপ্রেমী। একদিন ওরা নেতা হবে। তখন আমি তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমার এই উদ্যোগ। সে সময় ক্যামেরার প্রচলন এতটা ছিল না বলে সেই স্মৃতি ধরে রাখতে পারিনি। তাই সন্তানদেরকে নিয়ে আসি। যেন ওদের স্মৃতিটা এখন ধরে রাখতে পারি।
সিদ্দিক মিয়ার বর্তমান ইচ্ছার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমার একটাই ইচ্ছা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্তত একবার সাক্ষাত করতে পারি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছিলাম তার কন্যার সঙ্গেও একবার হ্যান্ডশেক করতে চাই। এটাই আমার একমাত্র ইচ্ছা। আমি কোন সাহায্য সহযোগিতা চাই না। তবে আমি কোনো সুপারিশের মাধ্যমেও উনার সামনে যেতে চাই না। যদি কখনো কোনো খবরের কাগজে বা কোথাও আমার সংবাদ দেখে তিনি আমাকে উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ করে দেন তবেই আমি গিয়ে উনার সঙ্গে সাক্ষাত করে আসবো।