ক্রিকেট অঙ্গনের সঙ্গে কোথায় যেন রাজনীতিরও একটা বড় মিল! রাজনীতির মতো এখানেও শেষ কথা বলে যেন কিছু নেই! কখন যে কী হয়, কার পৌষমাস আর কার সর্বনাশ আগাম আন্দাজ করার সুযোগ নেই। এমন কী যারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেয়ারে বসে তাদের এড়িয়েও চলে আসে চমক! বিস্ময়কর হলেও সত্য এনামুল হক বিজয়ের এশিয়া কাপ দলে জায়গা পাওয়ার ব্যাপারটিতে তেমন ঘটনাই ঘটেছে!
এভাবে হঠাৎ ডাক মিলবে জাতীয় দল থেকে খোদ বিজয়ও হয়তো অনুমান ও করেননি। করবেনই বা কী করে তিনি ছিলেন না এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের ভাবনায় গড়া ৩২ জনের প্রাথমিক দলে। মূল স্কোয়াড ঘোষণার পর স্ট্যান্ডবাই তালিকায়ও ছিলেন না এই ওপেনার। এমন কী বিশ্বকাপের ভাবনা রেখে যে ৮ ক্রিকেটার বিশেষ নজর পাচ্ছেন সেখানেও নেই তার নাম। তারপরও ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান খেলতে গেলেন এশিয়া কাপে। এমন কী রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার একাদশে থাকাটাও প্রায় নিশ্চিত!
অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে খবর মিলল এনামুল হক বিজয়ের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তিটা ঠিকঠাক প্রক্রিয়ায় হয়নি। লিটন কুমার দাস জ্বর নিয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিসিবিতে। নানাজনের নানা কথায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেকটা চটজলদি বিসিবির শীর্ষ পর্যায় থেকে এসেছে এই সিদ্ধান্ত। অথচ বিজয় যখন শ্রীলঙ্কার পথে উড়াল দিলেন তারপরই নিশ্চিত হলো- লিটন সুস্থ!
বিসিবির শীর্ষ পর্যায় থেকে বিজয়ের যে অন্তর্ভুক্তির যে সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে সেই সম্পর্কে নির্বাচক প্যানেলও অবগত ছিলেন না। বড়কর্তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আর নির্বাচক প্যানেল শুধু বিজয়ের নামটা ঘোষণা করেছে!
বিসিবির একটি সূত্র বার্তা ২৪-কে যেমনটা বলছে, 'দেখুন, বিজয় যে জাতীয় দলে জায়গা পেতে যাচ্ছেন লিটনের জায়গায় সেটি নির্বাচক প্যানেলও জানতো না। অনেকটা প্যানিক হয়ে টপ অফিসিয়ালরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাপারটায় নির্বাচক প্যানেল ও বিস্মিত হয়েছে। টপ অফিসিয়ালরা এটা যদি না বুঝেন তবে সামনে এমনটা হতেই থাকবে। স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশটা থাকছে না বোর্ডে।'
অবশ্য ক্রিকেট বোর্ডে এই সমস্যাটা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই টপ অফিসিয়ালরা নানাজনের নানা পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অথচ যাদের পরামর্শ নেওয়ার কথা ছিল তাদের অবজ্ঞা করছেন। এর আগে এমন অবজ্ঞার কারণেই নির্বাচক প্যানেল থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ফারুক আহমেদ।
অবশ্য লিটনের জায়গায় ডানহাতি একজন ওপেনার খুঁজতে গিয়ে তেমন বিকল্পও ছিল না বিসিবির হাতে। জাকির হাসান বাঁহাতি। লড়াইয়ে তিনি ছিলেন না। সেক্ষেত্রে আলোচনায় না থাকলেও এনামুল হক বিজয়ের জন্য ফের খুলতে হয়েছে জাতীয় দলের দরজা। তবে তাকে যে প্রক্রিয়ায় ডাকা হয়েছে সেটি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন! তাছাড়া লিটন যেখানে সুস্থ হয়ে উঠেছেন সেখানে তড়িগড়ি করে বিজয়কে এশিয়া কাপ দলে নেওয়ার কারণটাও বুঝতে পারছেন না অনেকে!
যেমনটা বলা হচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে শেষ কথা বলে কিছু নেই। এই একটা কারণেই আশায় বুক বাঁধতে পারেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এশিয়া কাপে সাকিব আল হাসানের দল প্রথম ম্যাচটা শ্রীলঙ্কার কাছে দলটা যেভাবে হেরেছে তাতে নাম্বার সেভেন রিয়াদের বিকল্প কোথায়? যে দলটা ৫০ ওভার খেলতে পারে না, সেই দল বিশ্বকাপ মিশনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অবজ্ঞা করবে কী করে? এমন কী ওপেনিংয়েও তামিম ইকবালকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো ওপেনারও নেই সাকিব-চন্ডিকা হাথুরুসিংহের হাতে!
প্রায় সব হিসেবের বাইরে চলে যাওয়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এই সেপ্টেম্বরেই নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলেই ফিরলে এখন আর অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!