এই ম্যাচের পর আরও সিরিজে এক ম্যাচ হাতে থাকবে বাংলাদেশের। তবু ওয়ানডেতে নিজেদের পুরোনো দাপট ফিরিয়ে আনতে সিরিজ জয়ে মরিয়া বাংলাদেশ এই ম্যাচ দিয়েই নিশ্চিত করতে চায় সিরিজ। সে লক্ষ্যে ব্যাট হাতে বাংলাদেশ কাজটা ঠিকঠাক সেরেছে। সৌম্য সরকার আর তাওহিদ হৃদয়ের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান তুলেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে প্রথম বলেই ফিরেছিলেন, এই ম্যাচে বল দুটি বেশি খেললেও রানের খাতা খোলা হয়নি এই ওপেনারের।
লিটন ব্যর্থ হলেও সৌম্য সরকার আজ জ্বলে উঠেছেন। লঙ্কান বোলারদের তুলোধুনো করে পেয়েছেন ফিফটি। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়ে তোলেন বড় জুটি। ৪০ রান করে শান্ত উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ৭৫ রানে ভাঙে সে জুটি।
তবে সৌম্য সহজাত খেলা চালিয়ে যান। একের পর এক দৃষ্টিনন্দন শটে দলের রানের চাকা সচল রাখেন। এর মধ্যে তার সিগনেচার পেরিস্কুপ শটেরও দেখা মেলে। এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দশম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে দুই হাজার ওয়ানডে রানের মালিক বনে যান সৌম্য। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে তার তৃতীয় উইকেট জুটিও ছাড়িয়ে যায় অর্ধশত রান।
সব যখন ঠিকঠাক চলছিল, তখন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার এক ওভারে ওলটপালট হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। হাসারাঙ্গার বলে রিভার্স সুইপ খেলেছিলেন সৌম্য, বল যখন সীমানা পার করতে চলছে প্রায়; তখনই ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ৬৮ রানে সৌম্যকে থামান মাদুশাঙ্কা।
এর এক বল পড়েই ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন মাহমুদউল্লাহ। এক ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন হৃদয়। তবে সেই হাসারাঙ্গার বলেই আবারও ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের। মুশফিককে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ৪৩ রানে সে জুটি থামিয়ে দেন হাসারাঙ্গা। ২৫ রানে সাঙ্গ হয় মুশফিকের ইনিংস। হাসারাঙ্গার বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১২)।
এরপরের লড়াইটা হৃদয়ের একার। লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে ধীরে এগোতে থাকেন হৃদয়। ৭৪ বলে ফিফটি ছুঁয়ে দলের স্কোরকে যতটা এগিয়ে নেয়া যায় সে চেষ্টাই করছিলেন এই তরুণ ব্যাটার। সে প্রচেষ্টায় তাকে সফলই বলা চলে। প্রথমে তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে ৪৭ এবং পরে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে তার ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
তিনটি চার এবং পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে ৯৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপের চেয়ে দলের রানকে ফুলেফেঁপে উঠতে দেখে তৃপ্তিটাই নিশ্চয়ই বেশি এই তরুণ ব্যাটারের।
লঙ্কানদের পক্ষে ৪ উইকেট পান লঙ্কান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।