যা আছে রাহুলের পদত্যাগ পত্রে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের দায় কাঁধে নিয়ে ৩ জুলাই কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ ছেড়েছেন রাহুল গান্ধী। এখানে তার পদত্যাগ পত্রের সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

‘কংগ্রেস পার্টির জন্য কাজ করাটা আমার জন্য সম্মানের, যে পার্টির মূল্যবোধ ও আদর্শ আমাদের এই সুন্দর জাতির প্রাণশক্তি।

আমি আমার দেশের কাছে ঋণী এবং দলের অসাধারণ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় আমি ঋণী।

কংগ্রেস পার্টির সভাপতি হিসেবে ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য আমি দায়ী। আমাদের দলের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য জবাবদিহিতা অত্যন্ত জরুরি। এটাই আমার কংগ্রেস পার্টির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার কারণ।

পার্টি পুনর্গঠনের জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ২০১৯ সালের পরাজয়ের জন্য অনেককে জবাবদিহি করতে হবে। দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যদের দায়ী করাটা অন্যায় হবে।

আমার অনেক সহকর্মী প্রস্তাব করেছিলেন যেন আমি পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি মনোনীত করি।

নতুন কারো নেতৃত্ব দেওয়াটা আমাদের দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেই ব্যক্তি কে হবেন, তা নির্বাচন করা আমার ঠিক হবে না। আমাদের দলের অসামান্য ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও মর্যাদাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। ভারত বুননে এটি গাঁথা রয়েছে এবং আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দল সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে কে সাহস, ভালোবাসা ও সততা দিয়ে দলের নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

পদত্যাগের পরপরই আমি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডিব্লিউসি) সহকর্মীদের বলেছি, যেন কয়েকজনকে দলের নতুন সভাপতি খোঁজা শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি তাদের এই ক্ষমতা দিয়েছি এবং এই প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিতে ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য আমার লড়াই মোটেই সহজ ছিল না। বিজেপির প্রতি আমার কোনো ঘৃণা বা রাগ না থাকলেও আমার দেহের প্রতিটি জীবন্ত কণা দিয়ে আমি তাদের ভারত সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলোর বিরোধিতা করি। এই বিরোধিতার কারণ, আমি যে ভারতীয় মূল্যবোধ লালন করি, তার সঙ্গে তাদের ধ্যান-ধারণা সব সময় সরাসরি সাংঘর্ষিক। এ যুদ্ধ নতুন নয়, হাজার হাজার বছর আগে থেকেই আমাদের মাটিতে এটা চলছে। তারা যেখানে পার্থক্য দেখেন, আমি সেখানে দেখি সাদৃশ্য। তারা যেখানে ঘৃণা দেখেন, আমি দেখি ভালোবাসা। তারা যা ভয় করেন, আমি তা আলিঙ্গন করি।

এমন সহনুভূতিশীল ধ্যান-ধারণা আমার কোটি কোটি প্রিয় নাগরিকের হৃদয়ে রয়েছে। ভারতের এই মূল্যবোধ আমরা কঠোরভাবে রক্ষা করব।

আমাদের দেশ ও লালিত সংবিধানের ওপর আক্রমণ আমাদের জাতি সত্ত্বা ধ্বংসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমি কোনোভাবেই এই লড়াই থেকে পিছপা হচ্ছি না। আমি কংগ্রেস পার্টির একজন বিশ্বস্ত সৈনিক এবং ভারতের অনুগত সন্তান। আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশকে সেবা দেব এবং রক্ষা করব।

আমরা একটি শক্তিশালী এবং মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আমাদের প্রচারণা ছিল ভারতের সব জনগণ, ধর্ম ও গোষ্ঠীর ভ্রাতৃত্ব, পরমতসহিষ্ণুতা ও সম্মানের জন্য। আমি আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, আরএসএস এবং তাদের দখলে থাকা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আমি ভারতকে ভালোবাসি বলেই এ লড়াই করেছি এবং ভারত যে আদর্শ নিয়ে গঠিত, সে আদর্শ রক্ষার্থে আমি লড়াই করেছি। এ লড়াইয়ে আমি সম্পূর্ণ একা ছিলাম এবং এজন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত। আমি আমাদের কর্মী এবং দলের নারী ও পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, যারা আমাকে ভালোবাসা ও সৌজন্যবোধ শিখিয়েছেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ থাকা প্রয়োজন; দেশের বিচারক তুল্য সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং স্বচ্ছ, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন না থাকলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না । যদি একটি দলের কাছে দেশের সব আর্থিক সম্পদ কুক্ষিগত থাকে, তাহলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

২০১৯ সালের নির্বাচনে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লড়াই করিনি। বরং আমরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে পরিচালিত ভারতের পুরো মেশিনারিজ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এটা এখন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ যে ভারতে এখন আর আমাদের লালিত প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতা নেই।

আরএসএস’র আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্য এখন পূরণ হয়েছে। আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আসল বিপদটা হলো এখন থেকে নির্বাচন ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পরিবর্তে নিছক আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হবে।

এই ক্ষমতা দখলের ফলে ভারতের সহিংসতা ও কষ্ট অকল্পনীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে। কৃষক, বেকার যুব সমাজ, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে যাচ্ছেন। এটি হবে আমাদের অর্থনীতি এবং দেশের খ্যাতির জন্য ধ্বংসাত্মক। প্রধানমন্ত্রীর বিজয় তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বহর বাতিল করতে পারবে না; কোনো টাকা এবং প্রোপাগান্ডাই সত্যের আলো লুকিয়ে রাখতে পারে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতীয় জাতিকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কংগ্রেস পার্টি হবে এই পুনর্গঠনের যন্ত্র।

htt
রাহুল গান্ধী, ছবি: সংগৃহীত



এই গুরু দায়িত্ব অর্জন করতে হলে কংগ্রেস পার্টির আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। আজ বিজেপি রীতিমত ভারতীয় জনগণের কণ্ঠস্বর নিষ্পেষণ করছে। তাদের কণ্ঠস্বর রক্ষা করা কংগ্রেস পার্টির দায়িত্ব। ভারত কখনো এক কন্ঠস্বরের ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। এখানে সম্মিলিত কণ্ঠস্বর আছে এবং থাকবে। এটিই ভারত মাতার সত্য সার কথা।

দেশ বিদেশের হাজারো ভারতীয় জনতাকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে মেসেজ এবং চিঠির মাধ্যমে সমর্থন দিয়েছেন। আমি অবশ্যই আমার সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস পার্টির আদর্শের জন্য লড়াই করে যাব। পার্টির যখনই আমার কোনো সেবা বা পরামর্শের দরকার হবে, আমি সঙ্গে আছি। 

যারা কংগ্রেস আদর্শে বিশ্বাস করেন, বিশেষ করে আমাদের নিবেদিত ও প্রিয় কর্মী, আমাদের ভবিষ্যতের ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস এবং আপনাদের প্রতি পরম ভালোবাসা রয়েছে।

ভারতে এই অভ্যাসটা রয়েছে যে শক্তিধররা ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চান, কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চান না। কিন্তু আমরা ক্ষমতার বাসনা ত্যাগ না করে আমাদের বিরোধীদের পরাজিত করব না। আমরা গভীর আদর্শগত যুদ্ধ করছি। আমি কংগ্রেসম্যান হিসেবে জন্ম নিয়েছি, এই দল সব সময় আমার সঙ্গে আছে এবং এটি আমার জীবনের প্রাণশক্তি, যা সারা জীবন এভাবেই থাকবে।

জয় হিন্দ
রাহুল গান্ধী’

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন রাহুল গান্ধী

   

সম্পর্কের অবনতির বিষয়ে ব্লিঙ্কেনকে সতর্ক করেছে চীন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধের সমাধান করার জন্য ‘সম্পর্কের অবনতি’ ঠেকানোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন। 

বেইজিংয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ক্ষমতাধর এই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু করার সময় এই আহ্বান জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি চীনের রাজধানীর প্রাচীন উদ্যানের দিয়াওইউতাইয়ে রাষ্ট্রীয় গেস্টহাউসে ব্লিঙ্কেনকে অভ্যর্থনা জানান।

বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্পর্কের অগ্রগতির আশা প্রকাশ করে ব্রিঙ্কেন বলেন, তিনি সরাসরি মত-পার্থক্যের বিষয়গুলো উত্থাপন করবেন। এসবের মধ্যে রাশিয়া, তাইওয়ান এবং বাণিজ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, নভেম্বরে এক শীর্ষ সম্মেলনে নেতা জো বাইডেন এবং শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের পর বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির এ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘স্থিতিশীল হতে শুরু করে। কিন্তু একই সময়ে সম্পর্কের নেতিবাচক বিভিন্ন বিষয় এখনো বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে।’ 

ওয়াং বলেন, দু’দেশের মধ্যে ‘সম্পর্ক বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। চীনের বৈধ উন্নয়ন অধিকার অযৌক্তিকভাবে দমন করা হচ্ছে এবং আমাদের মূল স্বার্থ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।’

এর আগে ব্লিঙ্কেনের সহযোগীরা বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনসহ বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয় সমাধান করবেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছরে তারা দ্রুততার সাথে তাদের সামরিক ঘাঁটি পুনঃনির্মাণ করেছে।

ওয়াংয়েরর সাথে বৈঠক শুরু করার সময় ব্লিঙ্কেন বলেন, এসব ক্ষেত্রে তিনি ‘খুব স্পষ্ট এবং খুব সরাসরি কথা বলবেন। এটি আমাদের দুই দেশের সামনে একটি প্রধান প্রশ্ন এবং আমাদের আন্তরিকতা এবং সক্ষমতার পরীক্ষা।’

তিনি আরো বলেন,‘আমাদের প্রেসিডেন্টরা যে সব বিষয়ে সম্মত হয়েছেন সে সব বিষয় আমরা কিছুটা এগিয়ে নেব বলে আমরা আশা করছি।’
ব্লিঙ্কেন বলেন, দুই দেশের ‘যে ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের মতভেদ আছে সে গুলো ব্যাপারে যতটা সম্ভব পরিষ্কার হওয়া উচিত। অন্ততপক্ষে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে আমাদের এমনটা করা উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা কেবলমাত্র আমাদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মানুষের জন্য এমনটা করা দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র স্থিতিশীলতার সাথে এগিয়ে যাবে নাকি নিম্নগামী সম্পর্কের দিকে ফিরে যাবে সে বিষয়টি অনেকটার নির্ধারিত হতে চলেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দেশে ব্লিঙ্কেনের এটি দ্বিতীয় সফর।

;

মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা তুলে নিলেন দেহদ্রাই



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই। এনডিটিভি জানিয়েছে, এই আইনজীবীর আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই সাংসদ পদ হারিয়েছিলেন মহুয়া।

দিল্লি হাইকোর্টে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এই মামলার শুনানি ছিল। সেই সময়ে আবেদনকারী দেহদ্রাইয়ের কৌঁসুলি রাঘব অবস্তী জানান, সাবেক সাংসদ যদি ঘোষণা করেন যে দেহদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি আর কোনও অসত্য অভিযোগ আনবেন না, তাহলে ২ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণের এই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, এর আগে মামলার শুনানিতে হাজির হয়ে মহুয়া দেহদ্রাইকে ‘লুনাটিক’ বা ‘পাগল’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। বিচারপতি প্রতীক জালান যার প্রতিবাদে বলেছিলেন, মহুয়ার মন্তব্য ‘দৃশ্যতই অসত্য।’

বৃহস্পতিবার বিচারপতি জালান বলেন, বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হয়ে গেলে ঘরের ঝগড়া প্রকাশ্যে আসবে না।

এর পরে মহুয়ার আইনজীবী সমুদ্র ষড়ঙ্গীকে বিচারপতি বলেন, ‘আপনি চাইলে বাদী পক্ষের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে নিতে পারেন। সেই জন্য কিছু সময় দেওয়া হলো।’

এরপর এজলাসের এক পাশে অবস্তী এবং ষড়ঙ্গী বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। তারপরে দেহদ্রাইয়ের পক্ষে আইনজীবী অবস্তী বিচারপতিকে বলেন, তিনি কোনও শর্ত ছাড়াই মামলাটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।

এরপরে বিচারপতি জালান ঘোষণা করেন, ‘বাদী পক্ষের অনুমতি নিয়ে তার কৌঁসুলি মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি খারিজ করা হলো।’

ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে ঘুষ ও উপহারের পরিবর্তে মহুয়া মৈত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুগত শিল্পপতি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লোকসভায় প্রশ্ন তুলতেন বলে অভিযোগ করেছিলেন দেহদ্রাই।

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সেই অভিযোগ লোকসভার স্পিকারের নজরে আনেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে মহুয়ার সাংসদ পদ কেড়ে নেয় লোকসভার শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি।

জবাবে মহুয়া দেহদ্রাইকে ‘কর্মহীন আইনজীবী’ এবং ‘প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই মন্তব্যের জন্যই মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছিলেন দেহদ্রাই।

তবে মহুয়াও দেহদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। সেই মামলা এখনও চলছে। মহুয়া বরাবরই দেহদ্রাইয়ের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

দেহদ্রাই জানিয়েছিলেন, লোকসভা সদস্য হিসাবে নিজের লগইন ও পাসওয়ার্ডও মহুয়া হিরানন্দানির এক কর্মচারীকে দিয়েছিলেন, যিনি মহুয়ার নামে লোকসভায় প্রশ্ন তৈরি করে পেশ করতেন।

মহুয়া বলেন, লগইন-পাসওয়ার্ড কোনও গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় যে তা অন্যকে দেওয়া যাবে না। সাংসদদের সহকারীরাই এটি ব্যবহার করে।

মহুয়া বলেন, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি লোকসভায় সবচেয়ে সরব বলেই বিজেপি দেহদ্রাইদের ঘুঁটি করে তার সদস্যপদ কেড়ে মুখ বন্ধ করিয়েছে। প্রথমে দূরত্ব রচনা করলেও পরে মহুয়ার পাশে দাঁড়ান তৃণমূল নেতৃত্ব। কৃষ্ণনগরে প্রার্থীও করেছেন তাকে। এই পরিস্থিতিতে দেহদ্রাইয়ের সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে মহুয়াকে।

;

রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন নিয়ে ব্লিঙ্কেনের উদ্বেগ প্রকাশ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতি চীনের সমর্থন সম্পর্কে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

রয়টার্স জানিয়েছে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতি চীনের সমর্থন বিশ্বের অর্থনীতির উন্নতির জন্য হুমকিস্বরূপ।

ব্লিঙ্কেন মার্কিন উদ্বেগের বিষয়ে বেইজিংয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইয়ের সঙ্গে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।

তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেইজিং-ওয়াশিংটনের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের যোগাযোগ ঐতিহাসিকভাবে নিম্ন স্তরে নেমে গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প ঘাঁটিতে চীনের সহায়তার বিষয়ে উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

মিলার আরও বলেন, এ ছাড়াও দুই পক্ষ তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর এবং অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছে।

মস্কোর সঙ্গে কোনো সীমা বা অংশীদারিত্ব না থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে স্পষ্টভাবে এগিয়ে গেছে বেইজিং।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, চীনের কোম্পানিগুলো অস্ত্র শিল্পকে অভূতপূর্ব সহায়তা দিয়ে সাহায্য করছে, যা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সাহায্য করেছে।

উদাহরণস্বরূপ মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, চীন থেকে বড় মেশিন টুল আমদানি রাশিয়াকে তার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করেছে।

২০২২ সালে তৎকালীন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সন্দেহভাজন চীনা নজরদারি বেলুনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নামিয়ে ফেলার পরে সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়ার পরেও মার্কিন কর্মকর্তারা রাশিয়াকে এ ধরনের সহায়তার ঝুঁকি বৃহত্তর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।

এদিকে ব্লিঙ্কেনের অভিযোগের জবাবে চীন বলেছে, তারা কোন পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করেনি।

বেইজিং বলেছে, তারা ইউক্রেন সংকটে জড়িত কোন পক্ষ এবং বিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চীন এবং রাশিয়ার মধ্যে স্বাভাবিক বাণিজ্য বাধা বা সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, দুই দেশের অংশীদার হওয়া উচিত, প্রতিদ্বন্দ্বী নয় এবং তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা সমাধান করতে হবে।

বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাতকালে শি বলেন, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকে দুই দেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে।

শি আরও বলেন, এখনও অনেকগুলো সমস্যা রয়েছে, যেগুলোর সমাধান করা দরকার এবং আরও প্রচেষ্টার জন্য এখনও অবকাশ রয়েছে। আমি তিনটি প্রধান নীতির প্রস্তাব করছি। সেগুলো হলো, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সহযোগিতা।’

;

গাজার ৩ গণকবরে ৪০০ মরদেহ, তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিধ্বস্ত গাজার দক্ষিণাঞ্চলের ৩টি গণকবর থেকে প্রায় ৪০০ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে খান ইউনিস থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরই ওই অঞ্চলে গণকবরের সন্ধান মেলে। খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের ভেতর থেকে সবচেয়ে বেশি মরদেহ উদ্ধার হয়।   

জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘গাজার গণকবর থেকে পাওয়া মরদেহের ফরেনসিক তথ্য সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এসব তথ্য তদন্তে সহায়ক হবে।’

এদিকে ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাসপাতালের কাছে তিনটি গণকবর থেকে ৩৯২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক তদন্ত হলে সবরকমের সহযোগিতা করবে ফিলিস্তিন সিভিল ডিফেন্স।   

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এর পর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ।

;