‘ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া ২০১৯’ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বে ইশরাত
বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস , সংস্কৃতি ও বন্ধুত্ব দুই দেশের সীমানার মতোই কাছের। এই বন্ধন, বিশ্বাস, ভ্রাতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করতে সংস্কৃতির আদান-প্রদানে ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ইচ্ছায় শুরু হয় 'বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া'।
এই আয়োজনের আওতায় প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন অঙ্গনের ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে ভারত সফরে নিয়ে যায় ঢাকা ভারতীয় হাইকমিশন। ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বরাবরের মতোই দীর্ঘ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শত শত তরুণ-তরুণীর মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ইশরাত। বলা হচ্ছে, ভারতের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যুবশ্রেণী। বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাচ্ছেন, তারাও যুবশ্রেণীর। বিভিন্ন অঙ্গনের এই তরুণ-তরুণীরাই আগামীতে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশকে।
তাদের মধ্যে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ইশরাত বিনতে রউফ। ইশরাত এর স্কুল ও কলেজ ছিল দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ। এস এস সি ও এইচ এস সি তে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করে ইশরাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন।
তার অভাবনীয় একাডেমিক ফলাফল শিক্ষক ছাত্র সমাজের কাছে পরিচিত করে তোলার পাশাপাশি, এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম ও তার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। নিজ ডিপার্টমেন্ট এর একজন টপার হিসেবে মাস্টার্স শেষ করার পর তিনি আরো সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে পৃথিবী বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল ম্যাডাম এর একজন মডেল হিসেবে পরিগণিত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি বিভিন্ন ভলান্টারি কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। ইউ এস এইড এর নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এ তিনি ওয়ার্কশপ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন। নিজ ডিপার্টমেন্ট থেকে ইউ এস এইড এর আউটরিচ প্রোগ্রামেও তিনি যোগদান করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
ইশরাত বিনতে রউফ তার কাজের পাশাপাশি লেগে পড়েন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে . আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জে সি আই এ তিনি পর্যায়ক্রমে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সেক্রেটারি জেনেরাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি ন্যাশনাল ইয়ুথ লেড সংস্থা- জেন ল্যাব এর সাথে কাজ করছেন।
ইউ এন ডি পির প্রকল্প সমূহতে ইশরাত সুযোগ পান কক্সবাজারের শুকনাছড়ি তে একটি স্কুল পরিদর্শনের, যেখানে প্রায় চল্লিশ শতাংশ শিক্ষার্থী রোহিঙ্গা শিশু। শিশুদের সাথে কথা বলে, সময় কাটিয়ে তিনি জানান, কোমলমতি শিশু ও তাদের পরিবারের এমন দুর্দশা দেখলে অনুধাবন আসে যে আমাদের জীবনে যাই প্রাপ্তি তা অ্যাপ্রিশিয়েট করতে জানতে হবে।
সম্প্রতি ইশরাত ওমেন চ্যাপ্টার নামক ব্লগ সাইটে লেখা শুরু করেছেন। তার প্রথম আর্টিকেলটি হলো, ‘Moral policing: Breaching constitutional rights’.
কাজের নেশা ছাড়াও তার ঘোরাঘুরির নেশা রয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট এগারোটা দেশ ঘুরেছেন। বিদেশে ঘুরে বেড়ালেও ভালোবাসার জায়গা চিটাগং ও কক্সবাজার।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইশরাতের বড় পরিসর এ সামাজিক উন্নয়ন এ কাজ করতে চান, যুব সমাজ ও আসন্ন যুবদের সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। তার একটি ইউটিউব চ্যানেল নির্মাণাধীন। সময়ের অভাবে কাজটি করতে পারছেন না, কিন্তু খুব শীঘ্রই আরো মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চান ইশরাত রউফ।