ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের হুমকি দিয়েছেন ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে তিনি বলেছেন, পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করো; নয়ত আশ্রয়ণের ঘর বাতিল করে দেব।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৩ মে) উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের রাজষপুর আশ্রয়ণে গিয়ে বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেন ভূমি কর্মকর্তা সাহাবউদ্দি। এ সময় তিনি ওই আশ্রয়ণের সর্দার মো. শাহাদাতকে মঙ্গলবারের (১৪ মে) মধ্যে বাসিন্দাদের নিয়ে পরশুরাম সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ছবি ও আইডি কার্ড দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে নির্দেশনা দেন। পেনশন স্কিম চালু না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিল করবেন বলেও জানান তিনি। একইসময় তার সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদও আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের দ্রুত পেনশন স্কিম চালু করতে বলেন।
রাজষপুর আশ্রয়ণের বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, ঘরবাড়ি না থাকায় আমরা আশ্রয়ণে থাকি। সেখানের সবারই আর্থিক অবস্থা খারাপ। তারমধ্যে যদি এমন কিছু করে আমাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না। গরিব মানুষ কাউকে কিছু বলতেও পারিনা। খুব কষ্টে দিন পার করেছি।
আরেকজন বাসিন্দা বিজলি আক্তার বলেন, আশ্রয়ণের সর্দার শাহাদাত ও ইউপি সদস্য পেয়ার আহাম্মদ একটি লিফলেট দিয়ে ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তাদের কথা মতো ছবি, এনআইডি আর লিফলেট নিয়ে সোনালী ব্যাংকে গিয়েছি। কিন্তু সঙ্গে ৫০০ টাকা না নেওয়ায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনমতে বেঁচে আছি। এসব পেনশন স্কিমের বিষয়ে কিছু জানিনা। ভূমি অফিসের একজন স্যার পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে আমাদের ঘর বাতিল করে দেবেন বলেছে। এখন কিভাবে কি করব জানিনা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদ বলেন, আমি ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে সেখানে গিয়েছি। তাদের পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চিথলিয়া ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেছি। কাউকে জোর করা বা ঘর বাতিলের কথা বলিনি৷
পরশুরাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, পেনশন স্কিম নিবন্ধন করতে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দারা নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের বিষয়টি সঠিক নয়।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ভালো কাজের জন্য মানুষকে বলতে হয়। কিন্তু খারাপ কাজের জন্য বলতে হয় না। পেনশন স্কিম চালু করলে তাদের ভবিষ্যতের জন্যই উপকার হবে। তবে নিবন্ধন না করলে তাদের ঘর বাতিল করে দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।