বিআরটিএ‘তে ফিটনেস-লাইসেন্স নিতে তোড়জোড়

  • সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এবং ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হওয়ায় রাজধানীজুড়ে চলছে ব্যাপক গাড়ি ধরপাকড়। এ অবস্থায় গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স নিতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয়মুখী হচ্ছে গাড়ি মালিক ও চালকরা। দিনে আগে যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়তো বিআরটিএতে এখন তার তিনগুণ আবেদন জমা পড়ছে। বিশেষ করে বড় বড় বাস কোম্পানিগুলো বিআরটিএমুখী হচ্ছে বেশি। জানা গেছে, এসব কোম্পানির গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ বাসের ফিটনেস সনদ নেওয়া হয়নি।

বিআরটিএ ও পরিবহন মালিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে ড্রাইভিং লাইসেন্স, যানবাহনের ফিটনেস ও কাগজপত্র নবায়নসহ সংশ্লিষ্ট সব কাজ।’

মিরপুরের বিআরটি’র কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি আসছে তা নয়, পুলিশের গাড়িও লাইনে দাঁড়িয়েছে ফিটনেস সনদের জন্য। গেলো কিছুদিন শিক্ষাথীরা যেসব গাড়ি কাগজপত্র পায়নি তার মধ্যে পুলিশের গাড়ি ছিল প্রথমদিকে।প্রভাবশালীদের গাড়ির কাগজেও গরমিল ছিল। এ অবস্থায় রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, ইকুরিয়া বিআরটিএ ঘিরে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

আর বিআরটিএতে এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসার সংখ্যা অনেক। শুধু মিরপুর বিআরটিএর অফিসের তথ্যে দেখা গেছে, আগে প্রতিদিন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য গড়ে ১১০টির মতো আবেদন পড়তো। এখন প্রতিদিন আড়াইশো  আবেদন আসছে। নবায়নের জন্য আগে যেখানে ৫০টি আবেদন পড়তো, এখন পড়ছে ৯০টির বেশি। ফিটনেস সনদ নিতে আগে প্রতিদিন আবেদন পড়তো ৯শ। এখন পড়ছে ১ হাজার ৪শ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/07/1533642130522.jpg

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরটিএ'র একজন মোটরযান পরিদর্শক জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে যে পরিমাণ গাড়ি বিআরটিএতে আসছে তা সামাল দেওয়ার মতো জায়গা ও জনবল আমাদের নেই। কাজ দ্রুত গতিতে করেও শেষ হচ্ছে না। একসঙ্গে এতো গাড়ি আসায় আমাদের ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে।

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিটি বাস কোম্পানির যে শতভাগ ফিটনেস আছে তা কিন্তু নয়। নামকরা কোম্পানিগুলারও কমপক্ষে ১৫-২০ ভাগ গাড়ির ফিটনেস সনদ নেই। এখন  একটি কোম্পানির যদি ২০টি গাড়ি যদি একসঙ্গে বিআরটিএ কার্যালয়ে যায় তাহলে ওই বিআরটিএ’র কার্যালয়ে আর কোনো গাড়ি রাখার জায়গা থাকবে না।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মিরপুর ১০ নাম্বারে যে বিআরটিএ’র কার্যালয় আছে সেখানে ১০টি দূরপাল্লার বাস আনা হলে অন্য কোনো গাড়ি সেখানে রাখার জায়গা থাকবে না।

এমন অবস্থায় মন্ত্রীসভা সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে। ফলে সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি নামিয়ে মালিকরা এখন শঙ্কার মধ্যে আছেন। একটি দুটি গাড়িও যদি দুর্ঘটনায় পড়ে তা হলে তার খেসারত দিতে হবে অনেক। যে কারণে দুশ্চিন্তাও ভর করেছে মালিকদের মনে।