দিনাজপুরে ৯৬ শতাংশ জমিতে ধান চারা রোপণ

  • খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

দিনাজপুর জেলার ৯৬ শতাংশ আবাদী জমিতে ধান গাছের চারা রোপণ হয়ে গেছে। যদি বন্যার মত কোনো প্রকার দুর্যোগ না হয় তাহলে এবারের ফসলে ৭ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপন্ন করা সম্ভব হবে। যে পরিমাণ চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা দিনাজপুর অঞ্চলে চাহিদা পূরণ করে বাকী প্রায় ৫ লাখ টন চাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চাহিদা পূরণ করবে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শুকুর আলী সোমবার (২০ আগস্ট) বার্তা২৪.কমকে এসব কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দিনাজপুর জেলায় ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আজ ২০ আগস্ট পর্যন্ত দিনাজপুর জেলার ধান চাষে আবাদী ৯৬ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। এটা ভাল লক্ষণ। যেখানে পানির অভাব সেখানে সম্পূরক সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত বছর বন্যায় ধান গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তবে বন্যা মোকাবিলা করে কৃষকদের প্রচেষ্ঠায় শেষ পর্যন্ত ৭ লাখ ৫ হাজার টন চাল উৎপাদন করা গেছে অর্জিত ধান থেকে।

বিজ্ঞাপন

মো. শুকুর আলী জানান, এখন জেলায় যেসব সুগন্ধি ধানের চাষ হচ্ছে, তারমধ্যে বাদশাভোগ, ফিলিপাইন কাটারি, সম্পা কাটারি, কালোজিরা, ব্রি-ধান-৩৪, ব্রি ধান-৭০, জিরা কাটারি, কালো জিরা অন্যতম। তবে এখন ব্রি-৩৪ ধান এবং ব্রি ধান-৭০ হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায়। সে তুলনায় কাটারিভোগের উৎপাদন হার কম, ব্যয় বেশি। অনেক সময় ব্রি-৩৪ কে বাদশাভোগ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কৃষক মোকাররম হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগ ধান বিলুপ্তির পথে। আর বিলুপ্তপ্রায় দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগ ধান ফিরিয়ে আনতে উচ্চ ফলনশীল সুগন্ধি ব্রি ধান-৭০ চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এ ধানে আশাতীত ফলন পাচ্ছে কৃষক। ফলন দেখে এ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাশিলাহাট, ছোট বাউল, বড় বাউল, করিমুল্যাপুর, খানপুর, চিরিরবন্দর উপজেলায় কাউগাঁ, বিষ্টপুর, তালপুকুর মুকুন্দপুর, দুর্গাডাঙ্গা ও ভিয়াইল, পশ্চিম বাউল এবং কাহারোল উপজেলার দু-একটি উঁচু জায়গায় কাঠারি ভোগের মত বিশেষ জাতের ধান চাষ হয়। দরকার উঁচু বেলে-দোআঁশ মাটি।

বিরল উপজেলা এলাকার কৃষক বজলুল আলম জানান, কাটারিভোগে দরকার আসল গোবর সার।

কিন্তু গোবর সংগ্রহ করা কঠিন, দামও বেশী। আবার পাশের জমির রাসায়নিক সারের প্রভাবে ঘ্রাণ ও গুণগত মান বজায় রাখা যায় না। কাটারিভোগ অন্যান্য ধানের তুলনায় কম হয় আবার কাটারিভোগ চাষে অনেক বেশি পরিশ্রমও হয়। বীজ বাছাই থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত অত্যাধিক পরিচর্যা করতে হয়। ফসল তুললেও দাম মেলে সাধারণ ধানের মতোই যার ফলে কাঠারির জায়গা দখল করে নিচ্ছে নিত্য নতুন চাল।