১৭ বছরেও বিচার হয়নি আ.লীগ নেতা জহুরুল হক হত্যার

  • স্টাফ করেসপেন্ডন্ট,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফটিকছড়ি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক চৌধুরী। ছবি: বার্তা২৪

ফটিকছড়ি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক চৌধুরী। ছবি: বার্তা২৪

চট্টগ্রাম: দীর্ঘ ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও ফটিকছড়ি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক চৌধুরী হত্যার বিচার হয়নি। উক্ত মামলার ১১ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলেও প্রকাশ্যে ঘুরছে আসামিরা। ২০০১ সালে ২৫ আগস্ট জামাত শিবির-বিএনপির সন্ত্রাসীদের গুলিতে নৃসংশভাবে খুন হন জহুরুল হক। ওই দিন ভোরে ঘরে জানালা দিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

ফটিকছড়ি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এম জহুরুল হক হত্যার ১৭ বছর পার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে ঘাতকরা। হত্যায় জড়িত অনেককে শনাক্ত করা  গেলেও অনেক আসামিকে গ্রেফতার করা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

হত্যাকাণ্ডের পর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হকের ছোট ভাই এডভোকেট খাইরুল হক বাদি হয়ে ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। পরবর্তীতে মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হয় ১১ জন আসামিকে সনাক্ত করে। এর মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরাও জামিনে এসে প্রকাশ্যে ঘুরছে। এর মধ্যে প্রধান আসামি ওসমান বাহিনীর প্রধান ওসমান গণি ২০১০ সালে র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন।

এডভোকেট খাইরুল হক বলেন, বর্তমানে সাক্ষীর অভাবে মামলাটি চলছে প্রায় ধীর গতিতে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার যেমন পুলিশ, ডিএসবি, ডাক্তাররা ঠিক সময়ে সাক্ষী দিতে আসেন না। তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হলেও অনেকে সাক্ষী দেননি।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে একাধিকবার তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তন হয়ে সর্বশেষ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজকে। কিন্তু মামলার কার্যক্রম ধীরগতিতে চলায় হতাশ ও ক্ষুব্দ জহুরুল হকের পরিবারে।

খাইরুল হক বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চেয়ে তদন্ত সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছি। তারা টাকা ছাড়া মামলার একপাও এগুতে নারাজ। যা খুবি দুঃখ জনক। একজন মুক্তিযোদ্ধার সুষ্ঠ বিচার পাব কিনা জানি না।

এদিকে বর্তমান মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও ঘাতকরা শাস্তি পাবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হয়ে অনেক বছর ক্ষমতায় থাকার পরও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী বলেন, সন্ত্রাসী ওসমান বাহিনীর নেতৃত্বে তৎকালিন আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হককে নৃশংস ভাবে রাতে আধারে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্টু বিচার আমরা এখনো পায়নি। তবে র‌্যাবে ক্রসফায়ারে ওসমান নিহত হলেও অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে।

ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেন বলেন, জহুরুল হক চৌধুরী মানুষের উপকারের জন্য রাজনীতি করেছিলেন। দলমত নির্বিশেষে তিনি মানুষের সেবা করেছিলেন। আমরা আমাদের নেতা হত্যার সুষ্টু বিচার দাবি করছি।

এদিকে জহুরুল হকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ তার গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক স্মৃতি সংসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির পক্ষ থেকে পূষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।