‘সরকার কথা না রাখায় আবরারকে জীবন দিতে হয়েছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সমাবেশে বক্তব্য দেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন / ছবি: বার্তা২৪

সমাবেশে বক্তব্য দেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন / ছবি: বার্তা২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কথা রাখে নাই। তাই নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে ছেলেটি (বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার) রাস্তায় নেমেছিল, তাকে জীবন দিতে হয়েছে। তার রক্তে প্রমাণিত হলো দেশে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়তে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এই আন্দোলনের পুর্নসমর্থন জানাচ্ছি। এবং সরকারকে ছাত্রদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।’

বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ভবনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম।

বিজ্ঞাপন

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই সরকার (আওয়ামী লীগ) জনগণের সরকার নয়, ফ্যাসিবাদী সরকার। তাই তারা যা বলে তা করে না। আর এজন্যই সড়কে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে। ডাকসু নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন সকল ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে। অস্বাভাবিক সরকারের আমলে অস্বাভাবিক ঘটনা অতি স্বাভাবিক। তবে এই অস্বাভাবিক ঘটনা বেশিদিন চলতে পারে না। সরকার ছাত্রদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকার জন্য যে কথা দিয়েছিল। তারা সেই কথা রাখে নাই।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সম্পর্কে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন আবার শুরু হয়েছে। বাচ্চা ছেলে মেয়েরা কিছুদিন আগে যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে, সেই একই দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা আবার আন্দোলনে নেমেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করি। কোনো কোনো জায়গায় আন্দোলনকারীদের মারধর করা হয়েছে। পুলিশ এবং কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাবো ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করবেন না।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুচিকিৎসার জন্য হলেও বেগম জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন। তার মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দলকে আরও শক্তিশালী মজবুত করে লড়াইয়ে নামতে হবে। এই লড়াই শুধু খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য নয়। এই লড়াই হবে বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার লড়াই। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে বিএনপির কাছে বিরাট সুযোগ আসছে। অনেকে আমাদের হতাশ মনে করছেন, তবে আমরা হতাশ নই, আমরা হতবাক। আমাদেরকে প্রস্তুত হতে হবে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।’

একই সমাবেশে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে জেলখানার প্রতিটা ইট খুলে ফেলা উচিত। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলছি, জেল খাটছি। আমাদের ২৫ থেকে ২৬ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় এক লাখ মামলা দায়ের করা হয়। গত ২০০ বছরে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ১ লাখ মামলা হয়েছে এরকম কোনো ইতিহাস নেই। ব্রিটিশ আমলে আমরা পরাধীন ছিলাম। ইতিহাস খুলে দেখেন আমাদের বিরুদ্ধে কয়টা মামলা হয়েছে, কয়জন গুম হয়েছে? আমরা সবচেয়ে বেশি পরাধীন ছিলাম পাকিস্তান আমলে তখন বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কতটা মামলা হয়েছিল? যে বাংলাদেশ নিয়ে আমরা গর্ব করি সেই দেশকে বিশ্বের কাছে ছোট করে ফেলেছে এই অবৈধ সরকার। মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিরোধী দলের নেত্রীকে বিনা মামলায় বিনা অপরাধে জেলে ভরে রেখেছে। বেগম জিয়া যদি দণ্ডিত হয়। সাড়ে সাত লাখ হাজার কোটি টাকা যারা মেরে বিদেশে পাচার করেছে তাদেরকে কি বলবেন? বিচার হয়নি মামলা হয়নি কিন্তু পাচার হওয়া টাকা কথা পত্রপত্রিকায় এসেছে।’

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা হাজী মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহম্মদ রহমাতুল্লাহ, মৎসজীবি দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।