পাঁচ উপকারি মশলার পঞ্চকথা
আয়ুর্বেদ হলো এমন একটি চিকিৎসার ধরণ যা প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপকারি উপাদানের যথার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
হাজার বছরের পুরনো এই চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহৃত বেশিরভাগ উপাদানই আমাদের রান্নাঘরেই থাকে। সঠিক তথ্যের অভাবে যা ঠিকভাবে ব্যবহারে করা হয় না।
সময়ের পরিক্রমায় খাদ্যাভাস পরিবর্তিত হয়। ফলে উপকারি বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান বাদ পড়ে যায় অথবা তাদের ব্যবহার কমে যায় নিত্য দিনের খাদ্যাভাস থেকে। তাই আজকের ফিচারে এমন উপকারি পাঁচটি প্রাকৃতিক উপাদানের মশলার বর্ণনা তুলে ধরা হলো, আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে যার উপকারিতা ও ব্যবহার বেশ প্রচলিত।
হলুদ
ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন ধরণের রান্নায় সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ও ব্যবহৃত মশলা হলো হলুদ। রান্নায় স্বাদ বর্ধনের জন্য হলুদ প্রয়োজন হলেও, স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য আলাদাভাবেই দেখা হয়। নিয়মিত হলুদ খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মেটাবলিজমের হার বৃদ্ধি পায়। এছাড়া অ্যান্টি-সেপটিক উপাদান হলুদ কাঁটাছেড়া ও ত্বকের বিচিন্ন সমস্যায় প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জিরা
বহু পরীক্ষিত একটি উদ্ভিজ মশলা হলো জিরা, যা খাদ্য পরিপাকের জন্য খুবই উপকারি উপাদান হিসেবে কাজ করে। পাকস্থলীর সমস্যা ও পরিপাকজনিত জটিলতা দূর করতে জিরা চমৎকার কার্যকরি। এমনকি বমিভাব ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যাগুলোকেও কমিয়ে আনে জিরা। এছাড়া এতে থাকা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে ও পেটের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে জিরা রাখার চেষ্টা করতে হবে।
জাওন
ঘনঘন পেটে গ্যাসের সমস্যা ও পেটফোলা ভাব দেখা দেওয়ার সমস্যা থাকলে জাওন হতে পারে সবচেয়ে ভালো সমাধান। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ জাওন সিদ্ধ করে ছেঁকে, ঠাণ্ডা করে পানিটা পান করতে হবে। এতে করে দ্রুততম সময়ের মাঝে পেটের সমস্যা, গ্যাস, পেটফোলাভাব ও খাদ্য পরিপাকজনিত সমস্যা কমে যাবে।
কালো গোলমরিচ
কালো গোলমরিচের ঝাঁজ তার স্বাস্থ্য উপকারিতার মতোই তীব্র। এতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্টের উপকারিতা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। খাদ্য পরিপাকের সহায়তা থেকে শুরু করে, বাড়তি ওজনকে নিয়ন্ত্রনে আনার মতো উপকারিতা পাওয়া যাবে এই একটি উপাদান থেকেই। তবে আয়ুর্বেদিক ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা ও কাশির সমস্যায় কালো গোলমরিচ ব্যবহার করা হতো সবচেয়ে বেশি।
মেথি
শুধু চুলের পরিচর্যায় নয়, স্বাস্থ্য উপকারিতাও পাওয়া যায় মেথি থেকে। মেথির সবচেয়ে বড় গুণ হলো, এই উদ্ভিজ উপাদানটি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। এমনকি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, নিয়মিত ২৫-১০০ গ্রাম মেথি খাওয়ার ফলে ডায়বেটিক রোগীদের হাইপারগ্লাসেমিয়ার সমস্যা কমে যায় অনেকটা। ডায়বেটিস বাদে গলা ব্যাথাও কমায় মেথি।
আরো পড়ুন: সুঘ্রাণে সুস্বাস্থ্যে মেথি
আরো পড়ুন: সময় এখন কমলালেবুর!