নতুন বছর আসুক উপহারের আনন্দ নিয়ে!
হাতে গুণে আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি।
এরপরেই চলে আসবে নতুন আশা, নতুন উদ্যম ও নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে আনকোড়া একটি নতুন বছর। বিদায় নেবে ২০১৮, পদার্পন হবে ২০১৯ এর। নতুন বছরের শুরুতে উপহার পেতে যতটা ভালো লাগে, প্রিয় ও কাছের মানুষদের উপহার দিতে তার চাইতেও বেশি ভালো লাগে।
যেহেতু বছরের শেষ, তাই পকেটের অবস্থার দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। পকেটের অবস্থা ও প্রিয়জনের জন্য উপহারের ধরণ মিলিয়েই আজকের ফিচারটি লেখা। এতে করে পকেটের প্রতি খেয়ালও রাখা হবে, হাতেও থাকবে উপহারের আনন্দ।
উপহার দেওয়ার কথা উঠলে অবধারিতভাবে প্রথমেই আসবে বাবা-মায়ের কথা। জানেন তো, সন্তানের সুস্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যান ছাড়া বাবা-মায়েরা কিছুই চান না। কিন্তু বাবা-মায়ের হাতে উপহার তো তুলে দেওয়া চাই। যেহেতু শীতকাল, তাই দুজনের জন্যেই মিলিয়ে কিনে নিতে পারেন চমৎকার শাল। চাইলে মায়ের জন্য রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় কোন জিনিস কিনে ফেলতে পারেন। নতুন প্রেশার কুকার, ব্লেন্ডার কিংবা নন্সটিক প্যান হাতে নিয়ে খুশি না হয়ে উপায় থাকবে না আপনার মায়ের। বাবার জন্য ওয়ালেট কিংবা বেল্ট হতে পারে চমৎকার পছন্দ। বাবা-মা ধার্মিক হলে স্ব ধর্মের অনুষঙ্গও হতে পারে পারফেক্ট উপহার। মুসলমানদের জন্য জায়নামাজ, তসবি; হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য কাঁসার বাসন, সিঁদুরের কৌটা, প্রতিমার গহনা প্রভৃতি।
বাবা-মায়ের পর আসবে ছোট-বড় ভাই-বোনের কথা। সহোদরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলে খুব সহজেই জানা সম্ভব তারা কি পছন্দ করেন। কারোর হয়তো কলম জমানোর শখ। কেউ হয়তো নেইলপলিশ দিতে খুব পছন্দ করেন। ব্যস, আপনার অর্ধেক কাজ কমে গেলো। তাদের পছন্দ অনুযায়ী জিনিস কিনে নিন। সহোদর ছোট হলে কয়েক প্যাকেট চকলেট, চিপসও হতে পারে দারুণ উপহার।
এরপরেই আসবে বন্ধুবান্ধবের উপহারের প্রসঙ্গ। প্রিয় বন্ধুটা তার পছন্দসই কোন উপহার পেলে কতটা খুশি হবে সেটা আপনার চাইতে ভালো আর কেউ জানবে না। বন্ধু যদি বই পড়ুয়া হন, তবে উপহার হিসেবে বইয়ের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। কেউ যদি মেকআপ করতে ভালোবাসেন তবে উপহার কেনার বিষয়টি বেশ সহজ হয়ে যায় আপনার জন্য। মেকআপের বিভিন্ন সামগ্রির মাঝে বন্ধুর পছন্দ ও আপনার বাজেট অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন লিপস্টিক, লিপ গ্লস, আইশ্যাডো, হাইলাইটার, কাজল ইত্যাদি।
এর মাঝে প্রিয়জনের কথা ভুলে গেলে চলবে কি? প্রিয়জনের জন্য উপহারটাও হওয়া চাই একটু স্পেশাল, একটু ভিন্ন, একটু আলাদা। কিন্তু তার মানে কিন্তু এই নয় যে, যত দামি উপহার ততই ভালো। নিজের হাতে তৈরি করেও দিতে পারে এই উপহারটি। নিজের হাতে তৈরি উপহারের আমেজটাই থাকে ভিন্ন। যদি হাতে তৈরি করার ঝামেলায় না পড়তে চান তবে বেছে নিতে পারেন ফটোফ্রেম। নিজেদের ছবি সম্বলিত ফটোফ্রেম একটি চমৎকার উপহার। প্রিয় মানুষটি যদি ছবি আঁকতে ভালোবাসে তবে কিনে নিন স্কেচবুক। গান শুনতে পছন্দ করলে ভালো মানের ইয়ারফোন। আর যদি শাড়ি/ পাঞ্জাবী পরতে ভালোবাসেন প্রিয় মানুষটি তবে শাড়ি/পাঞ্জাবীই হবে সবচেয়ে সেরা উপহার। আর যদি ভালোবাসার মানুষটি হন প্রকৃতিপ্রেমী তাহলে তো কথাই নেই। ঝলমলে দুটো গাছ কিংবা তার পছন্দসই কোন গাছের বীজ কিনে ফেলুন নিশ্চিন্তে।
শেষ করা যাক সহকর্মীর উপহারের আলোচনা দিয়ে। সহকর্মীর কাজে আসবে এমন কিছু রাখতে পারেন উপহারের তালিকার প্রথম দিকে। এছাড়া নিউ ইয়ার কার্ড তো আছেই। এছাড়া ছোট দুল, আংটি, সানগ্লাস, বডি স্প্রেও কিনে নিতে পারেন উপহার হিসেবে।
একটা বিষয় মাথায় রাখুন, উপহারের অনেক বড় একটা অংশ হলো উপহারের পরিবেশনা। র্যাপিং পেপার কেনার বাজেট যদি শেষ হয়ে গেলেও মন খারাপ করবেন না। ঘরের পুরনো খবরের কাগজ দিয়েও খুব চমৎকারভাবে উপহার র্যাপ করা যায়। হোক না খুব ছোট উপহার, তাতে কি! ভালোবাসা জড়িয়ে আছে তো তার মাঝেই।
আরো পড়ুন: নতুন বছর আসুক সঞ্চয়ের প্রতিজ্ঞায়
আরো পড়ুন: ছুটির মাঝেও থাকা চাই ফিট!