ঈদ ছুটিতে লাগেজ গোছাতে...
এবারের ঈদে লম্বা সময়ের ছুটি পাচ্ছেন বেশিরভাগ কর্মজীবীরা।
এমন লম্বা ছুটি সাধারণত পাওয়া যায় না বলেই, এই ছুটিকে ঘিরে বড়সড় পরিকল্পনা রয়েছে অনেকের। বহুল প্রতীক্ষিত ও কাঙ্ক্ষিত এই ছুটি কাটানোর জন্যে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন অনেকে।
পুরো পরিবারের সাথে ঈদ কাটানোর জন্য দেশের বাড়ি পাড়ি জমাবেন ছুটির শুরুতেই। কেউ হয়তো সপরিবারে দেশের বাইরে কাটাবেন এই ছুটির সময়টি, দেশের ভেতরে ভ্রমণের জন্য বেরিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন হয়তো অনেকেই। আজ দিন পার হয়ে আগামীকাল আসলেই দেখা যাবে রাজধানীতে মানুষের উপস্থিতি কমে গিয়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়। ছুটির একটা বেলাও নষ্ট করা যাবে না একদম।
কিন্তু এই ছুটির সময়টি একদম নির্বিঘ্নে কাটানোর জন্য লাগেজে সঠিক জিনিসগুলো নেওয়া খুব খুব জরুরি। ৬-৭ দিনের জন্য লাগেজ ভর্তি ১০-১৫ সেট জামাকাপড় নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অন্তর্বাস সাথে নিতে ভুলে গেছেন একদম। এ এক মারাত্মক বিপদজনক পরিস্থিতি। এমন সমস্যাগুলো যেন না হয়, তার জন্যে তালিকা তৈরি করা নিতে হবে আগে থেকেই। তালিকা অনুযায়ী লাগেজে জিনিসপত্র নেওয়া হলে ছুটির দিনগুলো পার করা যাবে খুব আরামের সাথে।
প্রথমেই আসা যাক পোশাকের সংখ্যা নির্বাচনে। ৬-১০ দিনের জন্য ১৫টি পোশাক না নিয়ে ৫-৬টি পোশাক বা সেট নেওয়াই যথেষ্ট। বাড়তি কাপড় লাগেজে বাড়তি ওজন যোগ করা ব্যতীত কাজে আসবে না মোটেও। সেই সাথে মনে করে বাড়তি এক- দুই জোড়া জুতা বা চপ্পল নিতে হবে।
পোশাকের মতোই জরুরি হলো অন্তর্বাস। একগাদা পোশাক নেওয়া হলো কিন্তু সাথে শুধু এক সেট অন্তর্বাস। এতে করে দারুণ বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তাই মনে করে এই অনুষঙ্গটি নিয়ে নিন দুই-তিন সেট।
সাথে নিজের ব্যবহারের জন্য টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, চিরুনি, সাবান, ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার ও প্রসাধনী সামগ্রী একটি প্লাস্টিকের বসে নিয়ে নিন। বড় ব্যাগের পকেটে কিংবা কোন কাপড়ের ব্যাগে নিলে বাইরের চাপে টুথপেস্ট বের হয়ে যেতে পারে অথবা প্রসাধনী সামগ্রী ভেঙে যেতে পারে। প্লাস্টিকের বক্সে এই জিনিসগুলো সুরক্ষিত থাকবে।
সাথে মনে করে জরুরি ওষুধপত্রগুলোও গুছিয়ে নিতে হবে। কতদিনের জন্য বাইরে থাকা লাগবে, সে অনুযায়ী ওষুধ কিনে নিতে হবে। প্রয়োজনে কিছুটা বেশি পরিমাণে সংগ্রহে রাখতে হবে। কারণ প্রয়োজনের সময় যদি ওষুধ হাতের কাছে না থাকে তবে বিপদ দেখা দিতে পারে।
এছাড়া সাথে নিজের ভোটার আইডি কার্ড, আইডি কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এর মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোর ফটোকপি রাখুন। ক্যাশের পাশাপাশি বিকাশে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রাখুন। যদি ছুটি দেশের বাইরে কাটানোর পরিকল্পনা থাকে তবে পাসপোর্ট, ভিসাসহ ডলার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একটি ফাইলে গুছিয়ে নিন।
আপনি যদি নিয়মিত চশমা ব্যবহার করেন, তবে সাথে বাড়তি চশমা নিয়ে নিন। দুর্ঘটনাবশত চশমা হারিয়ে গেলে কিংবা ভেঙে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে।
এছাড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুইটি জিনিস অবশ্যই মনে করে সাথে রাখতে হবে- সানস্ক্রিন ও ছাতা। দেশে তো বটেই, দেশের বাইরেও বেশিরভাগ স্থানে এখন সামার সিজন চলছে। রোদেপোড়ার সমস্যা ও ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে এই দুইটা জিনিস বাধ্যতামূলকভাবেই সাথে রাখতে হবে। সঙ্গে আরও রাখুন সানগ্লাস।
এছাড়া ছোট শিশু যদি সাথে থাকে, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিস তালিকা তৈরি করে আলাদা ব্যাগে নিতে হবে। শিশুদের কোন একটি জিনিস যদি না নেওয়া হয়, তবে ভ্রমণে থাকাকালীন সময়ে অন্য স্থানে সেই জিনিসটি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হতে পারে।
একদম প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের বাইরে বাড়তি কোন কিছু নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটা যেন লাগেজে বাড়তি বোঝা হয়ে না দাঁড়ায় সে বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে। নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে ছুটির সময়টি পার করতে চাইলে সাথে প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিস গুছিয়ে নিতে হবে, যেন পরবর্তী সময়ে সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয়।
আরও পড়ুন: ঈদে ঘর গোছাতে ফেলে দিন অপ্রয়োজনীয় জিনিস
আরও পড়ুন: কার্পেট থেকে চুইংগাম উঠবে সহজেই