পানিশূন্যতা রোধে কী করা প্রয়োজন?
শরীর পানিশূন্য হয়ে যাওয়া বা পানি স্বল্পতা দেখা দেওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ডিহাইড্রেশন বলা হয়।
শরীরে যখন প্রয়োজনের তুলনায় পানির পরিমাণ অনেকখানি কমে যায় তখন ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।
যেকোন সময়েই এই পানিশূন্যতার সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। তবে গ্রীষ্মকালে এই সমস্যাটির প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। শিশু থেকে বয়স্ক ব্যক্তি, সকলেই এই সমস্যায় ভুগতে পারে।
পানি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তের ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়াও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ নানা শারীরিক কার্যক্রমের জন্য তরল উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিভিন্ন উপায়ে শরীর থেকে তরল তথা পানি নিঃসৃত হয়। যেমন- অতিমাত্রায় ঘাম, মলমূত্র-ত্যাগ ইত্যাদি। গরমকালে যেহেতু ঘাম অনেকটা বেশি হয়, এ সময়ে সকলের উচিৎ কিছু নিয়ম মেনে চলা। নতুবা সামান্য অবহেলার জন্য বড় ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
যেসব কারণে পানিশূন্যতা হতে পারে
১. খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম।
২. পানিসহ তরল জাতীয় খাদ্য না খাওয়া।
৩. অতিমাত্রায় রৌদ্রে থাকা।
৪. অতিরিক্ত মলমূত্র ত্যাগ করা কিংবা ডায়রিয়া জাতীয় সমস্যা হওয়া।
৫. শরীরের তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে গেলে অথবা জ্বর হলে।
৬. ডায়বেটিস বা কোনো কারণে ওষুধ বেশি খেলে।
৭. রোজা রাখলে শরীরে পানির পরিমাণ কমে আসে।
৮. খেলাধুলা বা শারীরিক কাজকর্মে ঘাম হলে।
শরীরে পানিশূন্যতার লক্ষণসমূহ
১. শরীরে দুর্বলভাব দেখা দেওয়া ও ঘুমঘুম লাগা।
২. মুখের ভেতরের অংশ শুকিয়ে আসা।
৩. বমিভাব দেখা দেওয়া।
৪. দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে আসা।
৫. মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেওয়া।
৬. অতিরিক্ত তৃষ্ণাভাব দেখা দেওয়া।
৭. মূত্র হলুদ হওয়া।
৮. ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠা।
৯. প্রেসার কমে যাওয়া।
পানিশূন্যতা রোধের উপায়সমূহ
১. দিনে কমপক্ষে (৮- ১০ গ্লাস) বা দুই লিটার পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
২. ঠাণ্ডা বা শীতল পরিবেশে থাকার চেষ্টা করতে হবে। একটানা রোদে বেশিক্ষণ না থেকে বাতাসযুক্ত জায়গায় অবস্থান করতে হবে।
৩. খেলাধুলা বা ব্যায়াম গরম আবহাওয়ায় কিছুটা কম করতে হবে।
৪. সবসময় পানির বোতল সাথে রাখতে হবে ও স্যালাইন পানিসহ ফলের শরবত পান করতে হবে।
৫. ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। শিশুদেরকে হালকা ও নরম কাপড়ের পোশাক পরাতে হবে।
এছাড়াও পানিশূন্যতা রোধে কিছু সবজি ও ফল খাওয়া প্রয়োজন।
শসা: এতে ৯৫ শতাংশ পানি এবং ক্যালরি মুক্ত ।
গাজর: ৯০ শতাংশ পানিযুক্ত গাজর খুব উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাবার এবং গাজরে প্রচুর পরিমাণ বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে ।
টমেটো: এই ফলটিতে পানির পরিমান প্রায় ৯৫ শতাংশ। এতে প্রচুর লাইকোপিন সহ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে।
তরমুজ: স্বাদু এই ফলটির প্রায় ৯১ শতাংশই পানি। মিষ্টি ফলে ক্যালোরি থাকে খুবই অল্প পরিমাণ।
স্ট্রবেরি: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ফলে ৯১ শতাংশ পানি আছে।
পানিশূন্যতার নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিয়মের ফলে এই সমস্যাটি দেখা দেয়। কিন্তু সমস্যার প্রকোপ বেশি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
আরও পড়ুন: পছন্দ না হলেও, যে সকল কারণে সবজি খাওয়া প্রয়োজন
আরও পড়ুন: এখন প্রয়োজন শসায় তৈরি ডিটক্স ওয়াটার