ডিপ ফ্রিজ খালি করার এইতো সময়!
কোরবানির ঈদে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজারে মাংস সংরক্ষণ নিয়ে।
একবারে অনেকখানি মাংস সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত স্থানের সংকুলান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় প্রতি ঈদেই। ঈদের দিন কোরবানির মাংস সংরক্ষণের জন্য যেন কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয়, সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা প্রয়োজন। এতে করে মাংস ডিপ ফ্রিজে ভালোভাবে রাখা নিয়ে কোন ধরনের ঝামেলা দেখা দিবে না।
কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করা ও গোছানোর জন্য উত্তম সময় হবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ফলে হাতে সময় নিয়ে কাজ করা যায়। ডিপ ফ্রিজ দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা না হলে বরফ জমে যায়। এই বরফ বাড়তি স্থান নিয়ে নেয়। তাই সবার আগে বরফ পরিষ্কার করে নিতে হবে। বরফ পরিষ্কারের সময় খেয়াল রাখতে হবে, ডিপ ফ্রিজের ভেতরের অংশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বরফ পরিষ্কার করা হয়ে গেলে পানিতে লিকুইড ডিশ ওয়াশার মিশিয়ে কাপড়ের সাহায্যে মুছে নিতে হবে। এতে করে ডিপ ফ্রিজের ভেতরের অংশে কোন বাজে ও পুরনো গন্ধ থাকলে দূর হয়ে যাবে।
এবারে আসা যাক ডিপ ফ্রিজে থাকা মাছ ও মাংসের বিষয়ে। এতোদিন ধরে যে মাছ ও মাংস ফ্রিজে ছিল সেগুলো নিশ্চয় ফেলে দেওয়া কিংবা একবারে রেঁধে ফেলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অনেকদিনের পুরনো মাছ ও মাংস বেছে বের করতে হবে। সাধারণত লম্বা সময় ধরে ডিপে প্রাণিজ প্রোটিন সংরক্ষণ করা হলে তার স্বাদ ও উপকারিতা উভয়ই কমে যায়।
পুরনো মাছ-মাংসগুলো পুনরায় ডিপ ফ্রিজিং করার বদলে রান্না করে ফেলতে হবে। এতে করে বেশ অনেকখানি জিনিস কমে আসবে। এছাড়া খেয়াল করে দেখবেন, ডিপ ফ্রিজে বহুদিনের পুরনো মাংসের অবশিষ্টাংশও সংরক্ষণ করা হয় রান্নায় ব্যবহারের জন্য। ডিপে রাখা হলেও চার-পাঁচ মাস পরেই এগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এমন কোন খাদ্যাংশ থাকলে সেটা বেছে ফেলে দিতে হবে।
এখন কিন্তু ডিপ ফ্রিজে শুধু মাছ-মাংসই নয়, সাথে বাটা ও টুকরা মশলা, বিভিন্ন ধরনের ফ্রোজেন ফুড ও বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল ফ্রোজেন করে রাখা হয়।
বাটা মশলা বেশ প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের সময়। সেক্ষেত্রে ফ্রোজেন বাটা মশলা একসাথে সব ব্যবহার না করে বা ফেলে না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট পাত্রে সকল বাটা মশলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে বাটা মশলা রাখা হলে অনেকখানি স্থানের প্রয়োজন হবে।
এবারে আসা যাক ফ্রোজেন ফুডের বিষয়ে। ভেজিটেবল রোল, সমুচা, সিঙ্গারা, কাটলেট, টিকিয়াসহ যাবতীয় ফ্রোজেন ফুডের সংখ্যাও কমিয়ে ফেলতে হবে। কোরবানির ঈদে সবার আকর্ষণ থাকবে কোরবানির মাংসে রাঁধা মজাদার খাবারের দিকেই। এ সময়ে ফ্রোজেন ফুডের প্রয়োজন হবে না। তবে যদি একান্তই প্রয়োজন থাকে ও স্টকে কিছু পরিমাণ ফ্রোজেন খাবার রাখতে হয়, তবে সকল আইটেম অল্প করে একটি বক্সে সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া সবজি ও ফল যদি ফ্রোজেন করে রাখা হয়, সেটা ঈদের আগে ব্যবহার করে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সবশেষে ভীষণ জরুরী বিষয়টি হলো, ডিপে খাবার সংরক্ষণের ধরণ। যে মাছ-মাংস, ফ্রোজেন খাবারগুলো ডিপে পুনরায় সংরক্ষণ করতে হচ্ছে, সেগুলো যদি এলোমেলোভাবে রাখা হয় তবে ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করেও কোন লাভ হবে না। ডিপের একটি নির্দিষ্ট অংশে গুছিয়ে সকল জিনিস রাখা হলে খুব সহজেই ডিপে অনেকখানি খালি স্থান হয়ে যাবে।
ধাপ ও নিয়ম মেনে ডিপ পরিষ্কার করতে পারলে ও কোরবানি ঈদের আগে একইভাবে রাখতে পারলে, ডিপে কোরবানির মাংস রাখা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে না।