নারী নেত্রীদের টার্গেট সংরক্ষিত আসন

  • মাহমুদ আল হাসান (রাফিন) ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাঁ থেকে আমেনা কহিনুর, তুরিন আফরোজ ও সরকার ফারহানা, ছবি: সংগৃহীত

বাঁ থেকে আমেনা কহিনুর, তুরিন আফরোজ ও সরকার ফারহানা, ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশের পর গঠিত হয়েছে মন্ত্রিসভা, হয়েছে শপথও। সংসদ নির্বাচন শেষ হতেই ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীরা সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

সাধারণ আসনের প্রার্থীরা শপথ গ্রহণের পর থেকে নীলফামারীর নারী নেত্রীরা ঢাকামুখী হয়েছেন। দল ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন সংরক্ষিত এমপি পদে আগ্রহীরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে তুলে ধরছেন তাদের ত্যাগের রাজনীতি।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী, শপথের ৩০ দিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করে ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী থেকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য করা হয়নি কাউকেই। একাদশ জাতীয় সংসদে নীলফামারী থেকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেত্রীকে সাংসদ করার দাবি উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়ী করতে ত্যাগী নেত্রীরা মাঠে ব্যাপক কাজ করেছেন। বাড়ি বাড়ি নৌকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভোট চেয়েছেন। নির্বাচনে নীলফামারী জেলার চারটি আসনেই মহাজোটের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করায় যাদের শ্রম রয়েছে তাদের সংরক্ষিত আসনে এমপি করা হউক।

এবার সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার দৌড়ে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী আমেনা কহিনুর। সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মহাজোটের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়েছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে।

আমেনা কোহিনূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল এ পিএইচডি রিসার্চ ফেলো হিসাবে গবেষণা করছেন। ১৯৯২-১৯৯৫ সালে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। একই হলের সূর্যাস্ত আইনের বিরুদ্ধে গঠিত আন্দোলনের আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই ছাত্রনেত্রী।

১৯৯১ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডে সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকে কোহিনূর আলম বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। লেখালেখি, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা এবং বিতর্কে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তার।

এছাড়াও মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক (কল্যাণ ও পুনর্বাসন) ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-শিক্ষা,প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক সরকার ফারহানা আক্তার সুমি।

তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি। ছাত্রলীগের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা) আসনে আ'লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। ভোটের মাঠে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তরুণ এ নেত্রী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের নাম ও শোনা যাচ্ছে সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়ন দৌড়ে। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন।

তুরিন আফরোজের পৈতৃক নিবাস নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাওড়াডাঙ্গী গ্রামে৷

আইন প্রণয়নে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে সংবিধানে বিশেষ কোটা চালু করা হয়। সেই থেকে প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ থাকছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ আরও ২৫ বছর নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বহাল রাখতে সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল-২০১৮ পাস করা হয়েছে।
২০০৪ সালে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৫টি নারী আসন ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এর আগে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ছিল ৩০টি। পরে নবম সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন করা হয়।

নীলফামারী জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, যে কোনো সময়ে সংরক্ষিত আসনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। মার্চের মধ্যে সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।