চাঁদপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা নেয়।
শনিবার (১ জুন) রাতে শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুর বাজার পপুলার হাসপাতালে গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসের (২৫ মে) মৃত্যু হয়। জান্নাতুল ফেরদৌস শাহরাস্তি পৌর এলাকার সেনগাঁও টুকুর বাপের বাড়ির আবদুল বারেকের পুত্র মোঃ হোসেনের স্ত্রী।
জানা যায়, জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা নেয়।
স্বজনদের অভিযোগ, ডাক্তারি পাস না করেই সিজার করেন চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম। কুমিল্লা থেকে ট্রেনিং করেই আরিফুল দেদারসে অস্ত্রোপচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বজনরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রসব ব্যথা জান্নাতুলের উঠে। পরে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঐদিন রাত ১২টায় সিজারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয় ফেরদৌস। এর পর থেকে প্রসূতির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে রাত ১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ভোর ৪টায় ঢামেক'এ ভর্তি করা হলে ১ জুন বিকাল সাড়ে ৪টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ওই প্রসূতি।
ঐ প্রসূতির স্বামী মোঃ হোসেন (৩৫) বলেন, ‘পপুলার হাসপাতালে ডাঃ আরিফুল ইসলাম ও ডাঃ নাজমুন নাহার মিতু জান্নাতুলের সিজার করান। এতে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ শুরু হলে ডাঃ আরিফুল ইসলাম ও ডাঃ নাজমুন নাহার মিতু আমাকে ডেকে বলেন, জান্নাতুলের জরায়ু অপারেশন করতে হবে, না হলে তার রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হবে না। আমি অপারগ হয়ে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করি এবং তারা আমার স্ত্রীর জরায়ু অপারেশন করেন। তারা আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করেছে।’
এদিকে ডাঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রোগী আসার পর প্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষায় রোগীর ‘প্লাসেন্টা প্রিভিয়’ রোগ ধরা পড়ে। তখন তার অভিভাকদের জানালে তারা অঙ্গীকার নামা ফরম পূরণ করে সিজার করার অনুমোতি প্রদান করেন। সফল অপারেশনের পর শুরু হয় রক্তক্ষরণ। রোগীর অভিভাবকদের জানালে তারা রক্তের ব্যবস্থা করেন। এক পর্যায়ে রোগির অবস্থা খারাপ হলে তাদের সাথে পরামর্শ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।’
শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযুক্ত দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হচ্ছে।’