ব্যবস্থাপত্রের অবস্থা বেহাল!

  • মনিরুজ্জামান বাবলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডে, চাঁদপুর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডা. মানিক লাল মজুমদারের ব্যবস্থাপত্র/ ছবি: সংগৃহীত

ডা. মানিক লাল মজুমদারের ব্যবস্থাপত্র/ ছবি: সংগৃহীত

ওষুধ কিনতে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে পরপর সাতটি দোকানে গেলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম। সব দোকান থেকে জানানো হলো, ‘লেখা বুঝি না, তাই ওষুধ দিতে পারব না!’

জাহিদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাসিন্দা মোবারকের ছেলে খুব অসুস্থ। তার ওষুধ কিনতে রোববার সকালে হাজীগঞ্জ বাজারের ফার্মেসিগুলোতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওষুধ কিনতে পারিনি। কারণ ব্যবস্থাপত্রের লেখা খুবই অস্পষ্ট। ডাক্তার যদি স্পষ্ট করে লিখত, তাহলে আমাকে সাতটি দোকানে হাঁটতে হতো না।’

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ঐ ব্যবস্থাপত্র লিখেছেন শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানিক লাল মজুমদার। তিনি হাজীগঞ্জ বাজারের নবীন ফার্মেসিতে নিয়মিত রোগী দেখেন। ঐ ফার্মেসি তারই তত্ত্বাবধানে চলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/11/1565525640200.gif

বিজ্ঞাপন

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে সরজমিনে ডা. মানিক লাল মজুমদারের চেম্বারে গিয়ে দেখে গেছে, সেখানে রোগীদের যথেষ্ট ভিড় আছে। আর তিনি রোগী দেখছেন। চারজন কর্মচারী রোগীর প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে ওষুধ কিনতে তোড়জোড় করছেন।

হাজীগঞ্জ বাজারের একাধিক ফার্মেসি কর্মচারী জানান, ডা. মানিক লাল মজুমদারের ব্যবস্থাপত্রের অক্ষর স্পষ্ট না হওয়ায় তাদের ওষুধ বিক্রি করতে বেশ সমস্যা হয়। তিনি এমনভাবে ব্যবস্থাপত্র লেখেন যেন তার ফার্মেসি থেকে রোগীরা ওষুধ কিনতে বাধ্য হন।

হাজীগঞ্জ বাজার ফার্মেসি মালিক সমিতির সভাপতি সোলেমান মজুমদার জানান, ব্যবস্থাপত্রে ইংরেজি বড় অক্ষরে লেখার নির্দেশনা রয়েছে। আর হাজীগঞ্জ বাজারে প্রায় ৬০টি ফার্মেসি রয়েছে। কিন্তু কেউ মানিক লালের করা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ বিক্রি করতে পারেন না।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালাল মিয়া জানান, মানিক লালের ব্যবস্থাপত্রের অক্ষর বুঝতে বেশ কষ্ট হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/11/1565525655325.gif

ডা. মানিক লাল মজুমদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমি ৪০ বছর ধরে এভাবেই ব্যবস্থাপত্র লিখছি। কিন্তু কখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ফার্মেসিগুলোতে ট্রেইনিংপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট না থাকায় ব্যবস্থাপত্র বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।’

তবে ইংরেজি বড় অক্ষরে ব্যবস্থাপত্র লেখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঐ আইনের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘এমন ব্যবস্থাপত্র রোগীদের জন্য বিপদজনক। ব্যবস্থাপত্র স্পষ্ট ও বড় অক্ষরে লিখতে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে।’