মানিকগঞ্জে বন্ধুকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন
মানিকগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র নয়ন হত্যা মামলায় নয়নের বন্ধু হৃদয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপর বন্ধু রাকিবকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে আদালতে আসামির উপস্থিতিতে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগম এই রায় প্রদান করেন।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত পিপি এ্যাড. আহসান হাবিব। বিবাদী পক্ষে ছিলেন এ্যাড. একেএম আজিজুল হক।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. রাকিব নূর হৃদয় (১৯)। সে মানিকগঞ্জ পৌরসভার বান্দুটিয়া এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। আরেক আসামি বান্দুটিয়া এলাকার আসাদুজ্জামান সালামের ছেলে মো. রাকিব (১৯)-কে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় বান্দুটিয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলাম মজিদের ছেলে মারুফ হাসান নয়নের বাড়িতে নয়ন, হৃদয় ও রাজু- তিন বন্ধু একসঙ্গে ঘুমায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে হৃদয় তার ফোন খুঁজে না পেয়ে নয়নকে তার মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দেয়।
এর জের ধরে তাদের কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে হৃদয় নয়নকে দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরের দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শাইলীপাড়া এলাকার সামছুলের দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হৃদয় ও রাকিব নয়নকে প্রথমে কিল-ঘুষি লাথি মারলে নয়ন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
এ সময় হৃদয় নয়নের বুকের ডান পাশে চাকু দিয়ে আঘাত করে। নয়ন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে তারা চলে যায়। পরে, এলাকাবাসী রক্তাক্ত অবস্থায় নয়নকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। নয়নের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে একদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ নভেম্বর রাতে নয়ন মারা যায়।
এই ঘটনায় ২৭ নভেম্বর, নয়নের চাচা মো. ফরিদ আল মাহমুদ বাদী হয়ে হৃদয় ও রাকিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই আশীষ কুমার সান্যাল ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর হৃদয় ও রাকিবকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।